
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট প্রতিনিধি): বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কুহারদাহ-নেহালপুর এলাকায় প্রায় ৩০০ বিঘা কৃষিজমিতে অনুমতি ছাড়া মৎস্য ঘের নির্মাণের অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জলাধার ও প্রাকৃতিক খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে—ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি, জমির প্রকৃত মালিকদের সম্মতি ছাড়াই সেখানে ঘের নির্মাণের চেষ্টা চলছে। এতে ধান ও অন্যান্য ফসলের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে তাদের জমিতে চারা রোপণ করেও তা রক্ষা করতে পারছেন না।
সোমবার বিকেলে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তাদের অভিযোগ, অন্তত ১০টি কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে, যা পরিবেশ ও কৃষিকাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
একজন কৃষক আবুয়াল সরদার বলেন, “জমিতে পানি আটকে আছে, সব চারা পচে গেছে। আগে কখনো ঘের ছিল না, এবার আমাদের অজান্তেই শুরু হয়েছে।”
আরেক কৃষক চান মাতুব্বর জানান, “আমার বরগা নেওয়া জমিও দখল হয়েছে। বাধা দিলে মামলা ও ভয় দেখায়।”
অন্যদিকে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে ভিন্ন বক্তব্য উঠে এসেছে। থানা কৃষকদলের সভাপতি সাদিক শিকদার বলেন, “এই এলাকায় আমার ও আমার আত্মীয়দের বহু বছরের নিজস্ব জমি রয়েছে। আমরা শতাধিক জমির মালিকের লিখিত সম্মতিতেই ঘের করেছি এবং ক্ষতিপূরণও দিয়েছি। কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।”
স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, এসব দাবি ভিত্তিহীন, কারণ অধিকাংশ জমির মালিক ঘেরের বিষয়ে কোনো সম্মতি দেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাবিবুল্লাহ বলেন, “আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে। প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আবুয়াল সরদার, মোশারেফ মাতুব্বর, মো. জালাল, রাবেয়া বেগমসহ আরও অনেকে। তারা অভিযোগ করেন, জমি দখলের সময় স্থানীয়দের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে, যা সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এলাকাবাসী দাবি করছেন, দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ না নিলে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বহু পরিবার জীবিকার অনিশ্চয়তায় পড়বে।