
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আবু সাঈদকে আটক এবং বিএনপি কর্মীদের নামে দ্যায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৮ মে) বেলা বারোটায় বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রামপালের বাঁশতলী ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রনেতা ভুক্তভোগী শেখ আল মামুন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আবু সাঈদ জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাঁশতলী ইউনিয়ন পরিষদেরও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি এলাকায় জামাত-বিএনপি দমন নিপীড়নে নেমেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিমের মুখে থাপ্পড় মেরেছিলেন। মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদের মিছিলে কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছেন। ৪ আগস্ট ফয়লা বাজারে ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বাঁশতলি ইউনিয়ন জামাতের নেতা মাওলানা আবুল হাসান ও শেখ আব্দুল খালিদকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। একই ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আজমিরকে পিটিয়ে হাত ভেঙে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আবু সাঈদ দিগরাজ ডাবল মার্ডার কেসের আসামি। এলাকার বঙ্কিমচন্দ্রকে মিথ্যা অপবাদে মারপিট করেছিলো। ঘটনার কয়েকদিন পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্কিমচন্দ্র মৃত্যুবরণ করেন। সেনা কর্মকর্তা মেজর ইশতিয়াক মাহমুদের পিতা মোঃ সাদেক হোসেনকে মারপিট করেছিল। তার বিবাহ বহির্ভূত একটি সন্তান রয়েছে। অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ধরা পড়ে নিজ স্ত্রীর হাতে জুতা পিটার শিকার হয়েছেন। জমির মালিকদের হারি না দিয়ে বছরের পর বছর তিনি সম্পত্তি জোর করে ভোগ দখল করেছেন। হাঁরির টাকা চাইতে গেলে অপমান অপদস্ত হয়েছেন। তার ভাই মোহাম্মদ আলী এবং ভাইপো ভিপি সোহেল ও বাঁশতলী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তারা কালীগঞ্জ বাজারে সাত বিঘা জমি বন্দোবস্ত নিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৫ই আগস্টের পর সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ পালিয়ে গেলেও শেখ আবু সাঈদ পালায় নাই। ৫ তারিখের পরে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবার আগে তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছেন দশটি খুন করে হলেও আমার অস্তিত্ব আমি টিকিয়ে রাখবো। তাদের বাড়িতে কমপক্ষে দশটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সে এলাকার শখানেক লোকের কাছ থেকে গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি সে তার স্ত্রী ফাতেমা সুলতানাকে দিয়ে আমাদের নামে দ্রুত বিচার আইনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই এর কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। অবশ্য ঐদিন রাতে আবু সাঈদ নিজে স্থানীয় জনসাধারণের উপরে গুলি চালিয়েছে। পুলিশ এসে তার রাইস মিল থেকে বোমা, রিভলবরের গুলি এবং ২৫ রাউন্ড শটগানের গুলি উদ্ধার করেছে। ওই রাতে আবু সাঈদ পালিয়ে গেলেও মিলের মধ্য থেকে তার স্ত্রী পুত্র এবং কথিত সাংবাদিক একরামুল হক রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আল মামুন বলেন, হাসিনা তার মন্ত্রী ও নেতারা পালিয়ে গেলেও বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে শেখ আবু সাঈদ। বর্তমান সরকার ও বিএনপি’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের লক্ষ্যে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি অনতিবিলম্বে বিএনপি কর্মীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ ডেভিল আবুসাঈদকে গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, শেখ মোহাম্মদ আবু শাহিন, শেখ গালিব হোসেন, শেখ কবির হোসেন, শেখ লিমন, মল্লিক হাসিব, শেখ রফিক, শেখ জিয়া এবং সিকদার মঈন উদ্দিন।