সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর প্রতিবাদে সচিবালয়ে সরকারি কর্মচারীদের লাগাতার বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার (২৭ মে) পুরো সচিবালয় এলাকাজুড়ে নেওয়া হয়েছে করা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের। সচিবালয়ে শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশের অনুমতি থাকলেও সাংবাদিক ও সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সকালে সচিবালয়ের প্রধান ফটক ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কঠোর নজরদারির পাশাপাশি প্রবেশ পথে একাধিক নিরাপত্তা স্তর বসানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। সচিবালয়ে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দুপুর ১২টার পর।
এর আগে, সোমবার (২৬ মে) রাতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় যে, মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। এতে বলা হয়, ‘অনিবার্য কারণবশত ২৭ মে সচিবালয়ে সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হলো।’
অন্যদিকে, মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভে নামেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শত শত কর্মচারী। সকালে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে তারা সরকারের প্রতি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিলের আহ্বান জানান। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ নামের একটি যৌথ প্ল্যাটফর্ম। তারা জানিয়েছেন, এই ফোরামের ব্যানারে কর্মসূচি চলবে ধারাবাহিকভাবে।
সচিবালয়ের বাইরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনেও উত্তেজনা দেখা যায়। সেখানে ‘জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে এক গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়, যেখানে সচিবালয়ের সংস্কারবিরোধী আমলাদের অপসারণ ও ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের’ দাবি জানানো হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতিতে সচিবালয় শুধু কর্মস্থল নয়, হয়ে উঠেছে একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তাপের কেন্দ্রবিন্দু। সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে কর্মচারীদের ধারাবাহিক আন্দোলন ও সরকারের কড়া অবস্থান দুইয়ের সংঘাতে তৈরি হয়েছে এক অনিশ্চিত ও উত্তেজনাপূর্ণ প্রেক্ষাপট।
https://www.kaabait.com