• বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ১১:১৭

জাপানে সরকারের নতুন কৌশল চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে

প্রতিনিধি: / ১৬ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

আন্তর্জাতিক: জাপানে সাম্প্রতিক সময়ে চালের মূল্যবৃদ্ধি দেশটির সরকারকে ব্যাপক চাপের মুখে ফেলেছে। জনগণের অসন্তোষ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্রমবর্ধমান দামে নির্বাচনের আগে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে চালের বাজার স্থিতিশীল করতে একটি বড় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে জাপান সরকার। নতুন কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি জানিয়েছেন, সরকার এবার বড় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরাসরি মজুদ চাল বিক্রি করবে।

এই ঘোষণা এসেছে গতকাল সোমবার। ওইদিন কৃষিমন্ত্রী কোইজুমি জানান, বর্তমানে বাজারে চালের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে এবং সরকারের প্রচলিত নিলামভিত্তিক বিক্রির পদ্ধতি কার্যকরভাবে মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য এবার বিকল্প উপায়ে ‘স্বেচ্ছা চুক্তির ভিত্তিতে’ বছরে অন্তত ১০ হাজার টন চাল বিক্রি করে এমন বড় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরাসরি চাল দেওয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে সরকার বাজারে ছাড়বে তিন লাখ টন চাল। কোইজুমি আরও জানিয়েছেন, জুন মাসের প্রথম ভাগেই এই চাল বিক্রি শুরু হবে। চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তীতে সরবরাহ আরও বাড়ানোর কথাও ভাবছে সরকার।

চাল সংকটের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। সরকারিভাবে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চালের দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ২০২৩ সালে দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহের ফলে চাল উৎপাদন কমে যাওয়া। এছাড়া বছরজুড়ে বড় ধরনের ভূমিকম্পের সতর্কতা জারির কারণে বহু মানুষ আতঙ্কে অপ্রয়োজনীয় পরিমাণ চাল কিনে মজুদ করে ফেলে।

এছাড়াও, রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক জাপানে প্রবেশ করায় দেশজুড়ে হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন খাতে চালের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কিছু ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে চাল মজুদ করেও পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই সংকটের মধ্যে জাপানের কৃষিমন্ত্রী পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো বিতর্কিত এক মন্তব্য করে ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়েন। তিনি বলেছিলেন, তিনি বিনা মূল্যে চাল পান বলে কখনো চাল কেনেন না। এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ, যার জেরে তাকু এতো পদত্যাগ করেন।

তার স্থলাভিষিক্ত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কোইজুমির ছেলে শিনজিরো কোইজুমি। দায়িত্ব নিয়েই তিনি চালের বাজার স্থিতিশীল করতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং সরাসরি বিক্রির এই নতুন উদ্যোগের ঘোষণা দেন।

জুলাইয়ে জাপানে উচ্চকক্ষের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগেই জনগণের আস্থা ফেরাতে এবং বাজারে চালের সংকট নিয়ন্ত্রণে আনতে এই পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা। সরাসরি বিক্রির এই প্রক্রিয়া কেবল মূল্য নিয়ন্ত্রণেই নয়, বরং সরকারের প্রতি জনসমর্থন পুনঃপ্রতিষ্ঠার দিকেও একটি কৌশল হতে পারে।

 


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com