সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

জুলাই থেকে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

প্রতিনিধি: / ১০৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

দীর্ঘ আলোচনা, মতবিনিময় ও অর্থনৈতিক বিবেচনার পর সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সরকার। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকারি চাকরিজীবীদের জীবনযাত্রার ব্যয় সামাল দিতে এই সিদ্ধান্তকে একটি বড় স্বস্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার (২২ মে)। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম থেকে নবম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে এবং দশম থেকে বিংশ গ্রেডের কর্মীরা ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। নতুন এই ভাতা কার্যকর হবে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন যে এবারের বাজেটে মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, “মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

বর্তমানে সরকারি কর্মীরা প্রতি বছর পাচ্ছেন ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট। এর পাশাপাশি, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে দেওয়া হচ্ছে ৫ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা। তবে নতুন মহার্ঘ ভাতা চালু হলে এই বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, নতুন মহার্ঘ ভাতা চালুর ফলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে আনুমানিক সাত হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৮২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা, যা জাতীয় বাজেটের প্রায় ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। এই ব্যয় আগামী অর্থবছরে বেড়ে প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।

এর আগে, গত ডিসেম্বর মাসে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রাথমিক সুপারিশ ছিল জানুয়ারি থেকেই মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করা। জনপ্রশাসন সচিবও সে সময় দ্রুত বাস্তবায়নের পক্ষে ছিলেন। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে সিদ্ধান্তে দেরি হয়। অর্থ উপদেষ্টাদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ উচ্চ ব্যয়ের কারণে আপত্তি জানান।

বিশ্লেষকদের মতে, এই মহার্ঘ ভাতা চালু হওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীরা যেমন কিছু আর্থিক স্বস্তি পাবেন, তেমনি এক ধরণের প্রণোদনা সুবিধা হারাতেও হবে। বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পদোন্নতিবঞ্চিত বা অবসরপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ৭৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ এবং বেতন বৈষম্যের অভিজ্ঞতা এই প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় গড়ে ৬ থেকে ৮ শতাংশ হারে বাড়ে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সম্ভাব্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৮৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে নতুন ভাতা যুক্ত হলে এই খাতের ব্যয় আরও বেড়ে যাবে।

এই সিদ্ধান্ত সরকারি চাকরিজীবীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি সরকারের বাজেট কাঠামোতেও একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।


এই বিভাগের আরো খবর