সর্বশেষ :
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

ভয়াবহ বিমান হামলায় ইয়েমেনে আহত ২১, হুথিদের পাল্টা হুঁশিয়ারি

প্রতিনিধি: / ১৫০ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে ইসরায়েলের ধারাবাহিক সামরিক অভিযানের ফলে। সম্প্রতি ইয়েমেনের হুদায়দাহ শহরে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সূত্র এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হামলায় অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। হামলার সময় প্রায় ৫০টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল হোদেইদা বন্দর এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী বাজিল শহরের একটি কংক্রিট কারখানা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফ জানায়, এই কারখানাটি হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুড়ঙ্গ ও অন্যান্য সামরিক নির্মাণকাজে ব্যবহৃত কংক্রিট এখান থেকেই সরবরাহ করা হতো বলে দাবি করা হয়েছে। আইডিএফের ভাষ্যমতে, এই হামলা হুথিদের অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতার ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছে।
এই হামলার প্রেক্ষাপটে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ (হুথি) আন্দোলনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। আন্দোলনের মিডিয়া বিভাগের প্রধান নাসরুদ্দিন আমের বলেন, “ইসরায়েলের এই বোমাবর্ষণে আমরা দমে যাব না। বরং এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। গাজা উপত্যকার প্রতি সংহতির অংশ হিসেবে আমাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ইরান সমর্থিত হুথি আন্দোলন আরও বলেছে, বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর এই আগ্রাসন কোনোভাবেই জায়নবাদী শক্তিকে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে না। আনসারুল্লাহ আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আল-বুখাইতি হুঁশিয়ার করে বলেন, “গাজা রক্ষায় আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হবেÑপ্রয়োজনে এর মূল্য দিয়েও।”
ইয়েমেন ছাড়াও একই দিনে লেবানন, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে হামলা চালায় ইসরায়েল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক হামলায় অন্তত ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। সিরিয়া এবং লেবাননে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়া গোলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের এই ধারাবাহিক হামলার নেপথ্যে রয়েছে গাজায় সামরিক অভিযান আরও জোরদারের পরিকল্পনা। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা সম্প্রতি গাজা পুরোপুরি দখল ও নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলগত প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই প্রেক্ষিতে হাজার হাজার রিজার্ভ সেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে, এবং আগামি কয়েক মাসে হামলা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইরান, হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ী বলেন, “এই যৌথ হামলা মানবতা ও আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী। এটি একটি নগ্ন আগ্রাসন।” লেবাননের হিজবুল্লাহ বলেছে, “আমরা ইয়েমেনের সাহসী নেতৃত্বের পাশে আছি এবং স্বাধীন জাতিগুলোকে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
এই ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও একটি বিস্তৃত সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।


এই বিভাগের আরো খবর