সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১০ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও সেনা মোতায়েন শিলিগুড়ি চিকেন’স নেকে

প্রতিনিধি: / ১১৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫

বিদেশ : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে সংযুক্তকারী একমাত্র প্রবেশপথ শিলিগুড়ি করিডোর। এর সঙ্গে উত্তরে নেপাল, পূর্বে বাংলাদেশ ও ভুটান এবং উত্তরে চিন সীমান্ত। আর এই ভূখণ্ডকে চিকেন’স নেক নামে পরিচিত। সমপ্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বাংলাদেশকে ভারতের এই অঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সমুদ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ‘একমাত্র অভিভাবক’ বলে মন্তব্য করেন। আর এর পরপরই চিকেন’স নেক অঞ্চলে ব্যাপক ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। সমপ্রতি ভারতীয় সেনাপ্রধানের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চিকেন’স নেক’ কোনো দুর্বল জায়গা নয়, বরং এটি ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল। যেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৈন্যদের যেকোনো ধরনের হুমকির মুখে দ্রুত মোতায়েন করা সম্ভব। ভারতীয় মিডিয়া বরাতে জানা যায়, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিস্তৃত পদক্ষেপ নিয়েছে- এর মধ্যে বিমানবাহিনী হাসিমারা বিমানঘাঁটিতে মিগ বিমানের পাশাপাশি রাফাল যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন মোতায়েন করেছে। সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধে করিডরে ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি রেজিমেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। আকাশপথে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ রুখতে ভারত এই অঞ্চলে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা মোতায়েন করেছে। এর বাইরে অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য এমআরএসএএম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। এছাড়া এই অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ত্রিশক্তি কর্পসের সদর দপ্তর করিডরের কাছে শুকনায় অবস্থিত। এই কর্পস অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, যেমন রাফালে যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত ‘আকাশ’ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সজ্জিত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের সফরে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ডে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি এই অঞ্চলের কৌশলগত উন্নয়নের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে ব্যাংককে মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হতে পারে। যদি এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে গত বছরের আগস্টে ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম মোদির সঙ্গে তার সরাসরি সাক্ষাৎ হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সামপ্রতিক মন্তব্য এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে বাংলাদেশে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢাকার বেইজিংয়ের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষত শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত এই অঞ্চলে তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করেছে। চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান সমপ্রতি উত্তরবঙ্গ সফর করে যুদ্ধ প্রস্ততি খতিয়ে দেখেছেন এবং ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়েছেন। এই সফরে নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা করেন। চিকেন’স নেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্ব ২০১৭ সালের ডোকলাম অচলাবস্থার সময় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সে সময় ভারতীয় বাহিনী ভুটানের ভূখণ্ডে চীনের রাস্তা নির্মাণের প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছিল। এই সড়ক শিলিগুড়ি করিডরকে বিপন্ন করতে পারত। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো ও প্রস্তুতিকে আরও জোরদার করছে।


এই বিভাগের আরো খবর