রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

যেসব সৌভাগ্যবানদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন

প্রতিনিধি: / ৭০ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫

ফেরেশতারা দোয়া করেন, পৃথিবীতে এমন কিছু সৌভাগ্যবান মানুষ আছেন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, যারা আরশ বহনে রত ও যারা তার চতুষ্পার্শ্বে ঘিরে আছে, তারা তাদের রবের পবিত্রতা, মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসাসহ এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে। আর তারা মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের রব, তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব যারা তওবা করে এবং তোমার পথ অবলম্বন করে তুমি তাদের ক্ষমা করো এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।

হে আমাদের রব, তুমি তাদের প্রবেশ করাও স্থায়ী জান্নাতে, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাদের দিয়েছ। তাদের মাতা-পিতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে তাদেরও। তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আর তুমি তাদের শাস্তি থেকে রক্ষা করো। সেদিন (কিয়ামতের দিন) তুমি যাকে শাস্তি থেকে রক্ষা করবে, তাকে তো অনুগ্রহই করবে, এটাই তো মহা সাফল্য। (সুরা মুমিন ৭-৯)

আল্লাহর বিস্ময়কর এক সৃষ্টির নাম ফেরেশতা। তাদের থেকে কখনো কোনো গুনাহ হয় না। তারা নিষ্পাপ পবিত্র। তারা সবসময় আল্লাহর তাসবিহ ও ইবাদতে মগ্ন থাকে। তাদের দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। পৃথিবীতে এমন সৌভাগ্যবান অনেক মানুষ আছেন, যাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। আজ তাদের নিয়ে আলোচনা করবো।

নামাজ শেষ করে অজুসহ নিজ স্থানে বসে থাকে
নামাজ মুমিনের ফরজ বিধান। নামাজ শেষ করে অজুসহ যে-সব মুসল্লি নিজ স্থানে বসে থাকে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। রসুল সা. বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা নামাজের পর নিজ স্থানে বসে থাকে, তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত তার অজু ভঙ্গ না হবে, (তারা বলেন,) হে আল্লাহ, আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ, আপনি তাদের ওপর দয়া করুন। (মুসনাদ আহমাদ ৬৭২৭)

অজু করে ঘুমালে ফেরেশতারা দোয়া করেন
রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি অজু করে রাত যাপন করেন তার শিয়রে একজন ফেরেশতা রাত যাপন করেন। তিনি যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হন (কোনো কোনো বর্ণনা মতে, যতবার ঘুমের ভেতর নড়াচড়া করেন) তখন ওই ফেরেশতা বলতে থাকেন, হে আল্লাহ, অমুককে মাফ করে দিন। কেননা তিনি পবিত্র অবস্থায় রাত যাপন করেছেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান ১০৫১)

যারা মসজিদের প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করেন
হযরত বারা বিন আজেব রা. বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রথম কাতারে নামাজ আদায়কারীর প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন। (ইবনে মাজাহ ৯৮৭)

নামাজের কাতারের ডানদিকে অবস্থান করা
রসুল সা. বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সেসব মানুষের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা কাতারের ডান পাশে নামাজ আদায় করে। (আবু দাউদ ৫৭৮)

নামাজে কাতারের মাঝখানে খালি জায়গা পূরণ করা
রসুল সা. বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা কাতারের সঙ্গে মিলিত হয়ে নামাজ আদায় করেন। আর যে ব্যক্তি কাতারের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে, আল্লাহ এর কারণে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। (ইবনে মাজাহ ৯৮৫)

যে রোগী দেখতে যায়
যারা রোগী দেখতে যায় বা রোগীর সেবা করে তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। হযরত আলী রা. বলেন, আমি রসুল সা. কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সকাল বেলা কোনো রোগীকে দেখতে গেল তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায়। তারা সবাই সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে।

আর তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় কোনো রোগীকে দেখতে গেল, তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায় এবং তারা সবাই সকাল পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। আর তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়। (মুসনাদ আহমাদ, ৯২৮, সহিহুল জামে ৫৭৬৭)

যে দীনের জ্ঞান শেখায়
রসুল সা. বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন, যারা মানুষকে কল্যাণকর বিষয় (দ্বিনি জ্ঞান) শেখায়। এমনকি গর্তের পিপীলিকা ও সাগরের মাছ তাদের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করে।’ (তিরমিজি ২৬০৯)

যে রসুল সা. এর ওপর দরুদ পড়ে
হযরত আবদুল্লাহ বিন আমের বিন রাবিয়া তার পিতা (আমের) রা. থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমি রসুল সা. কে মিম্বরে বক্তব্য দিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরুদ পেশ করবে ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করবে। তারা ততক্ষণ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকবে, যতক্ষণ সে দরুদ পেশ করতে থাকে। সুতরাং কম হোক বেশি হোক, যার ইচ্ছা সে দরুদ পড়তে পারে। (সহিহুল জামে ৫৭৪৪)

কোনো মুসলিম অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে
রসুল সা. বলেছেন, কোনো মুসলিম তার অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে তা কবুল করা হয় এবং তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। যখন সে তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে তখন নিযুক্ত ফেরেশতা বলে, আমিন। অর্থাৎ হে আল্লাহ, কবুল করুন এবং তোমার জন্য অনুরূপ (তোমার ভাইয়ের জন্য যা চাইলে আল্লাহ তোমাকেও তা দান করুন)। (মুসলিম ৮৮)

নিয়ম করে প্রতিদিন দান করলে
প্রতিদিন কিছু না কিছু দান করলে ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া যায়। রসুল সা. বলেন, প্রতি সকালে মানুষ যখন ঘুম থেকে ওঠে দুজন ফেরেশতা আসেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ, খরচকারীর ধন আরো বাড়িয়ে দিন। আর দ্বিতীয়জন বলেন, হে আল্লাহ, কৃপণকে ধ্বংস করে দিন। (মুসলিম ২২২৬)

 


এই বিভাগের আরো খবর