সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু পুনর্বহাল

প্রতিনিধি: / ১০৭ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত অভিশংসিত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে পুনরায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের পদে পুনর্বহাল করেছে। সোমবার আদালতের আট বিচারপতির মধ্যে সাতজন তার অভিশংসন বাতিলের পক্ষে রায় দেন, যা দেশটির চলমান রাজনৈতিক সংকটের সর্বশেষ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আদালতের পাঁচ বিচারপতি তাদের রায়ে উল্লেখ করেন যে, হানের বিরুদ্ধে অভিশংসনের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। যদিও সংসদে তার বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাব আইনগতভাবে বৈধ ছিল, তবে সংবিধান বা আইনের কোনো গুরুতর লঙ্ঘন না থাকায় তাকে সরানো ঠিক হয়নি। অন্যদিকে, দুই বিচারপতি যুক্তি দেন যে, সংসদীয় ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাব থাকায় অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু থেকেই অবৈধ ছিল।

এই রায়ের ফলে হান ডাক-সু পুনরায় দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আদালতের সিদ্ধান্তের পর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি সাংবিধানিক আদালতের ‘বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের’ প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সূত্রপাত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের মাধ্যমে। তিনি গত ৩ ডিসেম্বর স্বল্পসময়ের জন্য সামরিক আইন জারি করার পর ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ১৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিরোধীদল-নিয়ন্ত্রিত সংসদ তার পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে অভিশংসনের উদ্যোগ নেয়। সংসদে ১৯২ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ২৭ ডিসেম্বর তিনি পদচ্যুত হন।

সাংবিধানিক আদালত এখনো প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। অন্তত ছয়জন বিচারপতি যদি তার অভিশংসন বহাল রাখেন, তবে তিনি চিরতরে ক্ষমতাচ্যুত হবেন। এক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, যদি অভিশংসন বাতিল হয়, তবে ইউন পুনরায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন।

এছাড়া, ইউন সুক-ইওল আলাদাভাবে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সামরিক আইন জারির জন্য বিদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটির অর্থনীতি ও কূটনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন। হান ডাক-সুর পুনর্বহাল এই সংকটের সমাধানে কতটা ভূমিকা রাখবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট ইউনের ভাগ্য নির্ধারণের অপেক্ষায় পুরো দেশ তাকিয়ে আছে সাংবিধানিক আদালতের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।


এই বিভাগের আরো খবর