এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবিতে গত ২২ দিন ধরে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন। বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের ঈদুল আযহা থেকে শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী লিখিত বক্তব্যে জানান, বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তার বিদায়ী ভাষণে আসন্ন ঈদুল আযহা থেকে উৎসব ভাতা ও সম্পূরক বাজেট এবং আগামী বাজেট থেকে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও বিনোদন ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা রেখে জোট ঈদুল আযহা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান এবং সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া ও মেডিকেল ভাতা প্রদানের দাবিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশন পালন করে আসছি। আমরা আশা করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঈদুল আযহার আগেই আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করবে। যদি তা না হয়, তবে ঈদুল আযহার পর আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ে সচেষ্ট হব।”

সংবাদ সম্মেলনে জোটের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাসারসহ জোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা ঈদুল আযহা থেকে শুরু করে আগামী বাজেটে বাড়ানো হবে। আমরা বাজেটে এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখছি।”

এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাদের দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জাতীয়করণ, উৎসব ভাতা শতভাগ প্রদান, সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান ইত্যাদি। এবার ঈদুল আযহা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখলেও দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন ঈদুল আযহার আগেই শিক্ষক ও কর্মচারীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।