রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৫ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

মিয়ানমারের ‘হাতি কূটনীতির’ প্রশংসা করলেন পুতিন

প্রতিনিধি: / ৮৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ছয়টি হাতি উপহার দিয়েছেন। এই উপহারকে সামরিক বিশ্লেষকরা ‘হাতি কূটনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন। গত ৪ মার্চ মস্কোয় দুই নেতার বৈঠকে এই উপহার হস্তান্তর করা হয়। পুতিন হাতি উপহারের জন্য হ্লাইংকে ধন্যবাদ জানান এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণের প্রশংসা করেন। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ছয়টি হাতি উপহার দেন। এই হাতিগুলো মস্কোর চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। পুতিন এই উপহারের জন্য হ্লাইংকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনার উষ্ণ উপহারের জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারছি না।” এই উপহারকে বিশ্লেষকরা ‘হাতি কূটনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ, কিছুদিন আগেই রাশিয়া মিয়ানমারকে ছয়টি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করেছে। এই উপহারকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকে পুতিন উল্লেখ করেন যে, এ বছর রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে বন্ধুত্বের ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের ২৫তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে। গত বছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।” দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, কৃষি, পরিবহন ও অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কোম্পানি ‘রোসাটম’ মিয়ানমারে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ভবিষ্যতে তিন গুণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। রোসাটম এই প্রকল্পের অর্থায়ন ও পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের মানের প্রশংসা করেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সমর্থন জানান। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, মস্কো শীঘ্রই ইউক্রেনে বিজয় অর্জন করবে।” রাশিয়া মিয়ানমারকে সামরিক সহায়তা প্রদান করে আসছে এবং এই সহযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। সম্প্রতি রাশিয়া মিয়ানমারকে ছয়টি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করেছে।
পুতিন ঘোষণা করেন যে, আগামী ৯ মে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে মস্কোয় অনুষ্ঠিতব্য সামরিক কুচকাওয়াজে মিয়ানমারের একটি সামরিক দল অংশ নেবে। মিন অং হ্লাইংও এই কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকবেন। এই অনুষ্ঠান দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও এক ধাপ অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২১ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ও অস্থিরতা চলছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের ৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষের এক-তৃতীয়াংশ মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। রাশিয়া ও চীন মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সমর্থন করে আসছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়েছে।


এই বিভাগের আরো খবর