রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সামরিক স্থাপনায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা:পাকিস্তানে নিহত ৩৪, আহত বহু

প্রতিনিধি: / ১১০ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নু শহরে একটি সেনানিবাসে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচ জন পাকিস্তানি সেনাসদস্য এবং ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। এ ছাড়া ৩২ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার ইফতারের পর বিস্ফোরক বোঝাই দুটি গাড়ি ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়। পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর জওয়ানরা হামলাকারী চারজনসহ মোট ১৬ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করেছে।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইফতারের পর দুই আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি সেনানিবাসের প্রাচীরে আঘাত করে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর পাঁচ থেকে ছয়জন অস্ত্রধারী সেনানিবাসের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় তারা সফল হতে পারেনি। সেনাবাহিনী হামলাকারীদের সঙ্গে গোলাগুলি চালিয়ে ছয়জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে।
বান্নু হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ নওমান জানান, হামলায় নিহতদের মধ্যে সাতজন শিশু, তিনজন নারী এবং তিনজন বেসামরিক পুরুষ রয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩২ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের চিকিৎসা চলছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাঁচ জন সদস্যও এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
হামলার দায় স্বীকার করেছে হাফিজ গুল বাহাদুর নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে বিস্ফোরক বোঝাই দুটি গাড়ির মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ হামলার নেপথ্যে আফগান সংযোগ থাকার অভিযোগ করেছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, “গোয়েন্দা প্রতিবেদন দ্ব্যর্থহীনভাবে এই জঘন্য কাজে আফগান নাগরিকদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।” তারা আরও বলেছে, এই হামলা “আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত খাওয়ারিজ রিং নেতাদের দ্বারা সংগঠিত ও পরিচালিত হয়েছে।”
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, “পবিত্র রমজান মাসে ইফতারের সময় এই ধরনের হামলা একটি জঘন্য কাজ। জাতি এই ধরনের জঘন্য কাজকে প্রত্যাখ্যান করে।” প্রধানমন্ত্রী শরিফ বলেছেন, “পাকিস্তানের শত্রুদের এই ষড়যন্ত্র কখনো সফল হতে দেওয়া হবে না।”
হামলার পরপরই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। আইএসপিআর জানিয়েছে, “সীমান্তের ওপার থেকে আসা এই হুমকিগুলোর প্রতিক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে।” তারা আফগান সরকারকে তাদের মাটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জঙ্গি হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তালেবান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো দেশটির সামরিক ও নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে।


এই বিভাগের আরো খবর