বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবি

প্রতিনিধি: / ১৮২ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সারা দেশের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে ‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’।  রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি বছর এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত চার বছর কোনও আবেদন নেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালে যদি আবেদন না নেওয়া হয় তাহলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে বিনা বেতনে কেউ চাকরি করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ও সীমাহীন কষ্টের কথা চিন্তা করা দরকার। সে জন্য, এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর সব শর্ত বাতিল করে সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর্দশার অবসান করতে হবে। আরেক প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. নাজমুছ সাহাদাৎ আজাদী বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাজেটে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই টাকা দিয়ে অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে। সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. মনিমুল হক বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়াকে রাষ্ট্রের এক নম্বর অগ্রাধিকার হতে হবে। দেশে আন্দোলনরত যতগুলো পেশাজীবী সংগঠন যত দাবি করছে, তার মধ্যে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়া সবচেয়ে যৌক্তিক ও মানবিক দাবি। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নত না হলে দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থী তথা আদর্শ নাগরিক গঠন করা সম্ভব নয়। সে জন্য, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি: এদিকে, তৃতীয় ধাপে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানানো হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সারা বাংলাদেশের তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া চলমান যোগ্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা অবস্থান করছি। ২০১৩ সালে সারা বাংলাদেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করলেও সম-যোগ্যতা থাকার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে চলমান যোগ্য ৪ হাজারের বেশি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে যায়। এরই সঙ্গে প্রায় ৮ লাখের বেশি শিক্ষার্থী তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে আমরা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০১৮ সালে ১৮ দিন, ২০১৯ সালে ৫৬ দিন, ২০২৪ সালে ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছি। ২৫ থেকে ২৭ জানুয়ারি আন্দোলনের ফলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি চিঠি মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা হয়। এই চিঠি দ্রুত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। এসময় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মামুন অর রশিদ খোকন, মো. ফিরোজ উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, নুর ইসলাম, মোহাম্মদ আলী লিটন প্রমুখ।
প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়গুলোকে এমপিওভুক্ত করার দাবি: অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত সুনিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানানো হয়। তাদের দাবিগুলো হলো
১। সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে।
২। বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে।
৩। শিক্ষার্থীদের মিডডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলা সরজ্ঞাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪। ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে।
এসময় উপস্থিত বক্তারা বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে ২ হাজার ৭৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯-এর আলোকে জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়গুলোকে ক, খ, ও গ— তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে। যা অত্যন্ত ধীরগতির। ফলে সারা দেশে ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তারা বলেন, এরআগে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫৭টি এবং স্বীকৃতিবিহীন ১ হাজার ৭৭২টি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও ভুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ যা এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ, সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকুল শেখ, সমন্বায়ক গাউসুল আজম শিমু প্রমুখ।


এই বিভাগের আরো খবর