বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে বিপিডিবি

প্রতিনিধি: / ২০৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

সময়মতো কেনাকাটা ও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। সংস্থাটি দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের একক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান। তাছাড়া সংস্থাটি নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানা বিষয়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাটিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম থেকে শুরু করে প্রকল্পের কেনাকাটা, দরপত্র মূল্যায়নে বিলম্ব, ধীরগতিসহ নানা সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। ফলে শিডিউল অনুযায়ী সময়মতো কাজ শেষ করতে গিয়ে বিপিডিবি বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। এ নিয়ে বিপিডিবির পরিচালনা বোর্ড বিব্রতকর ও জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপিডিবির চলমান প্রকল্প, দরপত্র মূল্যায়ন, প্রকল্পের কেনাকাটায় গতি আনতে কর্মকর্তা, উৎপাদন, বিতরণ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়ে জোরালো তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিপিডিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিপিডিবির সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বিভিন্ন প্রকল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় মালপত্র কেনা এবং আসন্ন বিভিন্ন দরপত্র মূল্যায়নে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রস্তুতে দেরি হচ্ছে। ফলে বিপিডিবির বিভিন্ন প্রকল্পসন্তান্ত কাজ ও কেনাকাটায় দেরি হচ্ছে। বিপিডিবির উৎপাদন কার্যক্রম থেকে শুরু করে সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও নিজস্ব প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মপরিধি অনেক বড়। ওসব কাজ করার জন্য দুটি কমিটি রয়েছে। কিন্তু তাদের কাজে বেশ ধীরগতিতে চলছে। অনেক ক্ষেত্রে বোর্ড সভায় বিষয়গুলো উত্থাপন হলে অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়ায় কর্মকর্তাদের বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পাশাপাশি শিডিউল অনুযায়ী সবকিছু ঠিক রাখা যাচ্ছে না। বারবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হলেও নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ফলে কমে যাচ্ছে বিপিডিবির কাজের গতি। সূত্র জানায়, বর্তমানে বিপিডিবির দেড় শতাধিক দরপত্রের কাজ চলমান রয়েছে। গত বছর ওসব দরপত্র আহŸান করা হয় এবং চলতি মাস পর্যন্ত টেন্ডার জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। ওসব দরপত্র মূলত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণে যন্ত্রপাতি আমদানি, বিভিন্ন উপকেন্দ্র নির্মাণ, যন্ত্রাংশ আমদানি, লুব অয়েল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়নসংক্রান্ত। বর্তমানে সংস্থাটির আওতাধীন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের সংস্কার, প্রি-পেইড মিটার স্থাপন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নসংক্রান্ত সাতটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। ওসব প্রকল্প চলতি বছর এবং ২০২৬ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বিপিডিবি এককভাবে বিদ্যুতের ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় সংস্থাটির ওপর তীব্র চাপ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিভিন্ন কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, কেনাকাটা, প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানা কাজে জড়িত। আর ওসব কাজ এককভাবে করতে গেলে কাজে ধীরগতি হওয়া বা সময়মতো কাজ না হওয়াই স্বাভাবিক। সংস্থাটির ওপর চাপ কমানো হলে যেমন কাজে গতি আসবে, তেমনি যথাসময়ে প্রকল্পও বাস্তবায়ন হবে। তবে বিপিডিবি এখন তাদের চলমান ও আসন্ন কাজগুলোর মধ্যে যেগুলো দ্রæত ও প্রয়োজনীয় সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগিয়ে নিচ্ছে বলে সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান। তাছাড়া প্রকল্প বাছাই ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেসব দরপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এদিকে গত ২৪ ডিসেম্বর বিপিডিবির ২ হাজার ৭১তম বোর্ড সভায় বিভিন্ন প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন ও কাজে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বোর্ডের কর্মকর্তারা। ওই সভায় কাজে গতি আনতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তাব, দরপত্র মূল্যায়ন ও কেনাকাটায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। বিষয়টি মনিটরিংয়েরও নির্দেশনা দেয়া হয়। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানান, বিপিডিবির বিভিন্ন প্রকল্পে ও কাজে গতি আনতে যাচাই-বাছাই করে সেসব প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো আগে করা হচ্ছে। এতে বিপিডিবির কাজে যেমন গতি পাবে, সেই সঙ্গে দীর্ঘসূত্রতাও কমানো যাবে।


এই বিভাগের আরো খবর