বন্যা আক্রান্ত ১১টি জেলায় মোট ১২,৩৮,০৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭,০১,২০৪ জন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান। তিনি জানান, চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান। কামরুল হাসান বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। জেলাগুলো হল: ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। ৭৪ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা সংখ্যা ৫৫০টি। বন্যায় কুমিল্লায় ৬, ফেনীতে ১, চট্টগ্রামে ৫, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৫, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১, ল²ীপুরে ১ ও কক্সবাজারে ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া মৌলভীবাজারে ০২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত আছে: এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে বলেন জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান। গত ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি বলেও তিনি জানান। কামরুল হাসান বলেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলার নদীসমূহের পানি সমতল বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। সচিব বলেন, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে, তবে কোনো কোনো স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলি, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল সময়বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে। কামরুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।