সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৩ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

নিজস্ব শক্তি নেই, ৫ মোড়লের ওপর নির্ভরশীল জাতিসংঘ: ড. এ কে আবদুল মোমেন

প্রতিনিধি: / ২০০ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৩১ মে, ২০২৪

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, জাতিসংঘের নিজস্ব শক্তি বলতে কিছু নেই। পাঁচটি মোড়ল রাষ্ট্রের ওপর তারা নির্ভরশীল। শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিরসনে করণীয় নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ড. মোমেন বলেন, মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রনায়ক জনতার রায়ে নির্বাচিত নয়। তবে বাংলাদেশের সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। তাই আরব বিশ্ব ফিলিস্তিন ইস্যুতে জোরালো ভুমিকা রাখতে পারছে না। ব্রাজিলের মতো নন মুসলিম দেশ ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করলেও কোনো মুসলিম রাষ্ট্র এ পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওআইসি ও আরব লীগ একাধিকবার বৈঠকে বসলেও তারা ইসরায়েলি পণ্য বয়কটে এক হতে পারেনি। ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের কোনো বাণিজ্যিক সম্পর্ক না থাকলেও তাদের ও তাদের মিত্রদের অনেক পণ্য আমাদের দেশে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের ই-পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি ডিলিট করা দুঃখজনক। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কেউ আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা না করেই এ পরিবর্তন করেছে। পাসপোর্টকে আরও মানসম্পন্ন করা এবং খরচ কমানোর জন্য জার্মানি একটি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করেছে বলে আমাকে অভিহিত করা হয়। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের নিজস্ব শক্তি বলতে কিছু নেই। পাঁচটি মোড়ল রাষ্ট্রের ওপর তারা নির্ভরশীল। ১৫ হাজার শিশুসহ ৩৬ হাজার মানুষকে হত্যার পরও মানবতার ফেরিওয়ালারা ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো ভুমিকা রাখেনি। পশ্চিমাদের বাদ দিয়ে আরব বিশ্ব এক হলেও ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই বর্তমান সমস্যার সমাধান সম্ভব। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করা নিয়ে কোনো বিভক্তি নেই। সবাই ফিলিস্তিনের পক্ষে। ফিলিস্তিনিদের লড়াই একক কোনো লড়াই নয়। এ লড়াই সারা পৃথিবীর মানুষের লড়াই। এ লড়াই বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদেরও লড়াই। ফিলিস্তিনের মানুষের যে নীরব কান্না তা সারা বিশ্বের বিপন্ন আর্তমানবতার চিৎকার। গাজায় যে হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নৃশংসতা ও অমানবিকতা ঘটেছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কালো অধ্যায়। ফিলিস্তিনের প্রত্যেকটি মানুষ এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। খাদ্য নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, চিকিৎসা নেই। হাসপাতালে লাশের সারি। চারিদিকে মৃত মানুষের পচা লাশের গন্ধ। বেঁচে থাকা মানুষগুলো যেভাবে বেঁচে আছে তা বেঁচে থেকেও মরে যাওয়ার মতো। অনেক জায়গায় দেখা গেছে পরিবারের সবাই মারা গেলেও লাশ শনাক্তের জন্য হয়তো দুই একজন বেঁচে আছে। সন্তানের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লাশ শনাক্ত করতে পারছে না বাবা-মা। মাথার খুলি ভাঙা, ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অনেক শিশুর লাশ হাসপাতালে আনা হচ্ছে। তাই অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের শরীরের বিভিন্ন অংশে নাম লিখে রাখছেন। যাতে হামলায় মারা গেলেও নিজ সন্তানের লাশটি খুঁজে পাওয়া যায়। এ বর্বরতার অবসান হওয়া উচিত। ‘মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ঝুমুর বারী, সাংবাদিক এ কে এম মঈনুদ্দিন, সাংবাদিক একরামুল হক সায়েম, সাংবাদিক মাসুদ করিম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।


এই বিভাগের আরো খবর