সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের জব্দ করা চারটি ফ্ল্যাটে থাকা সব ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব সম্পদ রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ব্যবহারের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদক।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “আদালতের আদেশ অনুযায়ী ফ্ল্যাটগুলো থেকে উদ্ধার হওয়া আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ অন্যান্য মালামাল যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে।” নিলামে এসব মালামাল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকায় ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুদক সূত্রে জানা যায়, গুলশানে অবস্থিত ওই বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটগুলোতে থাকা বিপুল পরিমাণ মালামাল আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছিল। এর মধ্যে আধুনিক আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্য, ব্যবহার করা ও অব্যবহৃত কাপড়চোপড়, রান্নাঘরের সরঞ্জামসহ ব্যক্তিগত সামগ্রী ছিল। পচনশীল ও প্রয়োজনীয় কিছু মালামালের নমুনা রেখে বাকি সব ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়।
দুদক জানায়, বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সংস্থাটির অনুসন্ধান ও আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। মামলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
অনুসন্ধানে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে শত শত বিঘা জমি, একাধিক কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, ব্যাংক হিসাব ও অন্যান্য আর্থিক সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানায় দুদক। এর আগে আদালতের আদেশে এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, “রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় জব্দ করা অন্যান্য সম্পদের ক্ষেত্রেও আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনা মেনে পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালক ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় তার নাম আসে।