বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হলে দেশজুড়ে থাকা ভারতীয় সব ভিসা আবেদন কেন্দ্র পুরোপুরি চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন। চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং মানবিক বিবেচনায় জরুরি ভিসাসেবা অব্যাহত রাখার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র আইভ্যাক পরিদর্শন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। পরিদর্শনের সময় তিনি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ঘুরে দেখেন এবং আবেদনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতা শোনেন।
ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, গত সপ্তাহে নিরাপত্তাজনিত কারণে ঢাকার আইভ্যাক একদিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় পরে সেটি পুনরায় চালু করা হয়। বন্ধের দিনে যাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিকল্প তারিখে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
চলমান নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যেও চিকিৎসাসহ জরুরি ভিসাসেবা চালু রাখতে সচেষ্ট রয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। এ কারণে ঢাকা ছাড়াও খুলনা, সিলেট ও রাজশাহীর আইভ্যাক কেন্দ্রগুলোতে ভিসা কার্যক্রম চলমান আছে। তবে চট্টগ্রামের আইভ্যাক সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। হাইকমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ও শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রামে সহকারী হাইকমিশনারের প্রবেশপথে হামলা ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনার পর সেখানে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরিদর্শনকালে আইভ্যাক কর্মকর্তারা হাইকমিশনারকে জানান, ভিসা আবেদনের সময় বিপুল পরিমাণ জাল নথি জমা পড়ছে। পাশাপাশি দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীরা সার্ভারে হ্যাকের চেষ্টা করে কৃত্রিম চাপ সৃষ্টি করছে, যার ফলে প্রকৃত আবেদনকারীরা বৈধ অ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে তিনি আবেদনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ভিসার জন্য অবশ্যই বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে এবং দালালচক্রকে এড়িয়ে চলতে হবে।
ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাংলাদেশে থাকা সব ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।