স্পোর্টস: শুরুতে গোল হজম করে যেন ভড়কে গেল বসুন্ধরা কিংস। এরপর কিছুটা ধাতস্থ হয়ে, পুলিশ এফসির রক্ষণে চাপ বাড়িয়ে সমতার স্বস্তি ফিরে পেল তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে আবারও দৃশ্যপট বদলে গেল গোল খেয়ে। শেষ পর্যন্ত চলমান বাংলাদেশ ফুটবল লিগে প্রথম হারের তেতো স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ল মারিও গোমেসের দল।
দিনের অন্য ম্যাচে হোঁচট খেয়েছে শিরোপাধারী মোহামেডানও। শুরুতে এগিয়ে জয়ের আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের কাছে পয়েন্ট খুইয়েছে আলফাজ আহমেদের দল।
গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে শনিবার কিংসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পুলিশ এফসি। গত মৌসুমেও দুই দলের একটি খেলায় জিতেছিল তারা।
কুমিল্লার ভাষা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডানকে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে আরামবাগ। অন্য ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসি।
সপ্তম রাউন্ড শেষে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে কিংস। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফর্টিস। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রহমতগঞ্জ তৃতীয়, ১০ পয়েন্ট নিয়ে পুলিশ এফসি আছে চতুর্থ স্থানে। দেশের ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী দুই দল আবাহনী ও মোহামেডান আছে যথাক্রমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে।
গাজীপুরে তৃতীয় মিনিটেই কিংসকে চমকে দেয় পুলিশ। ওরগিয়েন তিসেরাংয়ের পাসে বল পেয়ে নিখুঁত কোনাকুণি শটে গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোর পাশ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রাব্বি হোসেন রাহুল। এগিয়ে যাওয়ার পর গোল আগলে রাখার দিকেই মনোযোগী হয় পুলিশ।
দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তো, ইমানুয়েল সানডের কয়েকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে ৩২তম মিনিটে সমতায় ফিরে কিংস। বঙ্রে ভেতর থেকে প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। এ নিয়ে লিগে তার গোল হলো ৫টি।
দ্বিতীয়ার্ধেও পুলিশ রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণ নির্ভর খেলতে থাকে। ৭০তম মিনিটে ডান দিক থেকে আসা ক্রস ওভারহেড কিকে ক্লিয়ার করে কিংসের ত্রাতা সাদ উদ্দিন। ৮৬তম মিনিটে দীপক রায়ের বুলেট গতির শট কিংসের ক্রসবার ঘেঁষে বাইরে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে কিংসকে আবারও স্তব্ধ করে দেয় পুলিশ। সতীর্থের ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচু শটে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন উগান্ডার মিডফিল্ডার শাফিক কাগিমু। এই গোলেই থেমে যায় চলতি লিগে কিংসের অজেয় যাত্রা।
কুমিল্লায় ম্যাচের ২৬তম মিনিটে মেহেদী হাসান মিঠুর গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান। তাদের সমতার স্বস্তিও উবে যায় প্রথমার্ধেই; ৩৮তম মিনিটে।
দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন আরামবাগের এক খেলোয়াড়, তবে মোহামেডানের এক ডিফেন্ডারের চার্জে বল চলে যায় আমির হাকিম বাপ্পীর পায়ে। কিছুটা জায়গা করে নিয়ে বাম পায়ের জোরাল শটে মোহামেডানের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
৭৬তম মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে ছুটেছিলেন মোহামেডানের মোহাম্মদ জুয়েল, একই সময় পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গোলকিপার আজাদ হোসেন, বল গ্রিপে নিয়ে নিশ্চিত গোল বাঁচান তিনি। তবে জুয়েলের সংঘর্ষে ব্যথা পেয়ে মাঠে পড়ে থাকেন কিছুক্ষণ। চিকিৎসা নিয়ে বাকিটা সময় পোস্ট আগলে রেখে মূল্যবান ১ পয়েন্ট এনে দেন তিনি। এই পয়েন্টের সুবাদেই লিগ টেবিলে তলানি থেকে একধাপ উপরে উঠে এসেছে আরামবাগ।