বিদেশ : অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সমুদ্র সৈকতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত প্রিয় স্থানীয় রাব্বি এলি শ্ল্যাঙ্গারকে গতকাল বুধবার শেষ বিদায় জানায় সিডনির ইহুদি সমপ্রদায়। এদিন উপাসনালয় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। তাঁর অন্তেষ্টিক্রিয়া চলাকালে শোকের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সিডনি থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। ‘বন্ডি রাব্বি’ নামে পরিচিত ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তির শবযানটি টেনে তোলার সময় এবং ‘তারকা ডেভিড’ লেখা কালো মখমলের কাপড়ে মোড়ানো তার কফিনটি নামানোর সময় শোকাহতরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। শোকাহত মানুষ অবিরাম স্রোতের মতো একে একে ভেতরে ঢুকে পড়ে, এ সময় দুই তরুণী কফিনের ওপর কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরা হাহাকার করে কাঁদতে থাকেন। যারা সিনাগগে জায়গা পাননি তারা তাদের ফোনে অনুষ্ঠানটি পর্যবেক্ষণ করার জন্য রাস্তায় জড়ো হন। রাব্বি লেভি উলফ সমপ্রদায়ের ‘অবর্ণনীয়’ ক্ষতির কথা তুলে ধরেন। এ সময় জনতা নীরবে তার বক্তব্য শোনেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী ৬৯ বছর বয়সী ডেভিড ডেইটজ, এএফপিকে বলেন, তিনি শ্লাঙ্গারকে ‘দীর্ঘদিন ধরে চেনেন।’ তিনি বলেন, ‘তিনি অনেক, অনেক মানুষকে ভালোভাবে প্রভাবিত করেছেন।’ ‘এখানে এমন একটি ঘটনা ঘটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটি ধাক্কা। ‘পাঁচ সন্তানের জনক শ্ল্যাঙ্গারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বন্ডির চাবাদ সিনাগগে। গত রোববারের গণহত্যায় নিহতদের বিদায়ে আগামী কয়েক দিনে যে ১৫টি শেষকৃত্য হওয়ার কথা, তার মধ্যে এটিই ছিল প্রথম। অফিসাররা উপাসনালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরিবারকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান। কফিনটি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, হিব্রু গানের করুণ সুরে বেজে ওঠে। কর্তৃপক্ষ জানায়, রোববারের হামলাটি অস্ট্রেলিয়ার ইহুদিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সংঘঠিত হয়। দেশটিকে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসাদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হিসেবে দেখা হয়ে আসছে। এটি হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় ২,৫০০ ব্যক্তির আবাসস্থল। সমপ্রদায়ের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে, ক্রমবর্ধমান ইহুদি-বিদ্বেষে সম্পর্কে তাদের সতর্কীকরণকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়নি। বিকেলে শহরের আর একটি সিনাগগে ৩৯ বছর বয়সী রাব্বি ইয়াকভ লেভিটানের দ্বিতীয় অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে।