মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

বায়ুদূষণের জেরে দিল্লিতে নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা, ক্লাস হবে অনলাইনে

প্রতিনিধি: / ৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিদেশ : ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণে স্কুলগুলো অনলাইন ক্লাসে চলে গেছে এবং নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে শহরজুড়ে ঘন বিষাক্ত ধোঁয়াশা ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে ফ্লাইট ও ট্রেন চলাচলে বিলম্ব দেখা দেয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। রবিবার ভারতের কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট দূষণ মোকাবিলায় তাদের ধাপে ধাপে প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার সর্বোচ্চ স্তর কার্যকর করে। এতে ‘লেভেল থ্রি’ থেকে বাড়িয়ে ‘লেভেল ফোর’ জারি করা হয়। এর ফলে পুরোনো ডিজেলচালিত ট্রাক দিল্লিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়েছে এবং স্কুলগুলোকে হাইব্রিড পদ্ধতিতে পাঠদান চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছোট শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতও রবিবার একটি সার্কুলার জারি করে আইনজীবী ও মামলার পক্ষগুলোকে শুনানিতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। দিল্লি ও আশপাশের এলাকাজুড়ে বিপজ্জনক মাত্রার বায়ুদূষণের সঙ্গে লড়াই করছে কর্তৃপক্ষ। শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেঙ্-একিইআই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত সীমার চেয়ে ৩০ গুণেরও বেশি ছিল। এ মাত্রার দূষণে সংস্পর্শে এলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে। দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় বিষাক্ত বায়ু একটি নিয়মিত সমস্যা, বিশেষ করে শীত মৌসুমে। এই সমস্যার জন্য শিল্পকারখানার নির্গমন, যানবাহনের ধোঁয়া, তাপমাত্রা কমে যাওয়া, বাতাসের গতি কম থাকা এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে মৌসুমি ফসলের খড় পোড়ানো—এই সব কিছুর সমন্বিত প্রভাবকে দায়ী করা হয়। সরকারি ‘সাফার’ অ্যাপ অনুযায়ী, গতকাল সোমবার ভোরে দিল্লিতে গড় একিউআই ছিল ৪৭১। ভারতের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ একিউআই মাত্রা ১০১ু২০০ কে ‘মাঝারি’, ২০১ু৩০০ কে ‘খারাপ’, ৩০১-৪০০ কে ‘অত্যন্ত খারাপ’ এবং ৪০০-এর বেশি হলে ‘চরম’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে। সরকারি অ্যাপগুলোতে একিউআই সর্বোচ্চ ৫০০ পর্যন্ত দেখানো হয়, যদিও বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো প্রায়ই এর চেয়েও বেশি মাত্রা রেকর্ড করে। গত শনিবার থেকে হঠাৎ করে বায়ুমানের অবনতি ঘটে। এর আগে এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতিতে কিছুটা উন্নতি হয়েছিল এবং তখন একিউআই ‘খারাপ’ ও ‘অত্যন্ত খারাপ’-এর মধ্যে ওঠানামা করছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামপ্রতিক বায়ুমানের অবনতির পেছনে উচ্চমাত্রার আর্দ্রতা এবং বাতাসের দিক পরিবর্তন দায়ী। এতে দূষণকারী কণার বিস্তার কমে গিয়ে ধোঁয়াশা তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের, বিশেষ করে শিশু ও হৃদ্রোগ কিংবা শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিদের, ঘরের ভেতরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে চরম একিউআই-এর মধ্যে থাকলে সুস্থ মানুষেরও শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলতি মাসের শুরুতে ফেডারেল সরকার সংসদে জানায়, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দিল্লির ছয়টি সরকারি হাসপাতালে তীব্র শ্বাসযন্ত্রজনিত অসুস্থতার দুই লাখের বেশি রোগী নথিভুক্ত হয়েছে, যা রাজধানীতে বাড়তে থাকা দূষণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।


এই বিভাগের আরো খবর