সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা তিনটি আপিলের চূড়ান্ত শুনানি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদালত এ সময় জানায়, দীর্ঘদিনের জটিল প্রক্রিয়া শেষ করে এগুলো শুনানির পর্যায়ে এসেছে এবং নির্বাচনের পরই তা নিষ্পত্তির জন্য তোলা হবে।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হয় ২০১১ সালের ৩০ জুন। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ সংবিধানের ৫৪টি ধারায় পরিবর্তন আনা হয়। এর বৈধতা নিয়ে গত বছর হাইকোর্টে দুটি পৃথক রিট দায়ের হয়। একটি করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সম্পাদকসহ কয়েকজন এবং অন্যটি করেন নওগাঁর বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। একই সঙ্গে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করা হয়, তবে গণভোট সংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তিন পক্ষ আপিল করেন। সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেন। নওগাঁর মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি করেন এবং তৃতীয় আপিলটি করে জামায়াতে ইসলামী। আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয় ৩ ডিসেম্বর। এরপর টানা ৪, ৭, ৮ এবং ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি চলে। আদালতে আপিলকারীদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।
বেঞ্চে আদেশ দেওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, “১৫ বছরের জঞ্জাল সরিয়েছি ১৬ মাসে।” তার মন্তব্যকে অনেকেই সংশোধনী এবং এর পরবর্তী রাজনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘ টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে দেওয়া একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।