বিদেশ : যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মায়ানমারের নাগরিকদের জন্য দেওয়া ‘অস্থায়ী অভিবাসন সুবিধা’ (টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস বা টিপিএস) শেষ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রে মায়ানমারের টিপিএসের সুবিধাভোগী নাগরিক রয়েছেন প্রায় চার হাজার। তাদের জন্য এ সুবিধা আগামী ২৬ জানুয়ারি শেষ হবে বলে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। মায়ানমারের নাগরিকদের জন্য টিপিএসের মেয়াদ ১৮ মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেন প্রশাসনের সময় ২৫ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল এটি। রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিক দেশের নাগরিকের টিপিএস সুবিধা বাতিল করেছেন। নাগরিকেরা নিরাপদে যুদ্ধকবলিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ফিরতে পারবেন বলে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে। মায়ানমারের সামরিক শাসক গোষ্ঠীর পরিকল্পিত নির্বাচন আয়োজনের ঘটনার উল্লেখ করে পরিস্থিতির উন্নতি হিসেবে দেখিয়েছে প্রশাসন। অন্যদিকে সামরিক সংঘাত, সশস্ত্র দ্বন্দ্ব ও স্থানীয় আইন নিজের মতো প্রয়োগের কারণে মায়ানমার ভ্রমণ না করার জন্য মার্কিনিদের সমপ্রতি সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। পররাষ্ট্র দপ্তরের আগস্টের প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মায়ানমারের মানবাধিকার সংকট আরো খারাপ হয়েছে। সামরিক শাসকগোষ্ঠী ও বিরোধীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। ফলে বেসামরিক এলাকায় বা এর কাছাকাছি বিমান হামলা ও কামান থেকে গোলাবর্ষণ বেড়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মায়ানমারের নাগরিক মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা হয়তো নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হবেন। মায়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থান ও বেসামরিক সরকার উৎখাত হয়। এরপর থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতায় রয়েছে দেশটি। অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়েছেন, মায়ানমারের জন্য টিপিএসের আর প্রয়োজন নেই। এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত টিপিএসকে তার মূল সাময়িক অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে।’ তিনি বলেন, ‘বার্মার পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। সেখানে নাগরিকেরা নিরাপদে ফিরতে পারেন। তাই আমরা সাময়িক স্বীকৃতির অবসান ঘটাচ্ছি। বার্মা তার সরকারব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। এর মধ্যে আছে জরুরি অবস্থার অবসান ঘটা, স্বচ্ছ ও মুক্ত নির্বাচনের পরিকল্পনা, সফল যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং স্থানীয় প্রশাসনের উন্নতি।’ ডিএইচএস এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে, মায়ানমারের সামরিক সরকার জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নিয়েছে। এতে চীনের মধ্যস্থতার ভূমিকা রয়েছে। ডিএইচএস পুরনো শান্তি প্রচেষ্টার সঙ্গে এ আলোচনাকে তুলনা করে এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখিয়েছে। সূত্র : রয়টার্স