আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দিনব্যাপী সংলাপে নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, জাতিকে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চান তারা। মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংলাপে যোগ দিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
সংলাপের শুরুতেই সিইসি বলেন, অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশন সামনে এগোতে চায়। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন একা দায়িত্ব পালন করতে পারবে না এবং একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন করতে হলে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন। তার বক্তব্যে উঠে আসে একটি পরিষ্কার বার্তা, পর্যবেক্ষকরা যেন দায়িত্বশীলতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে মাঠে কাজ করেন।
আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে সিইসি জানান, চলতি বছর পর্যবেক্ষকদের বয়সসীমা কমিয়ে ২১ বছর করা হয়েছে। ফলে নতুনদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, ওরিয়েন্টেশন ও আইন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, নতুন পর্যবেক্ষকদের ভুলত্রুটি সংস্থার ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তাই তাদের প্রস্তুত করতে হবে সংগঠনগুলোকেই।
এ এম এম নাসির উদ্দিন পরিষ্কারভাবে সতর্ক করেন, রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত কাউকে কোনোভাবেই নির্বাচনি পর্যবেক্ষক করা যাবে না। তার ভাষায়, “আপনাদের লোকজন রাজনীতিতে জড়ালে সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তারা কেবল পর্যবেক্ষণ করবেন, হস্তক্ষেপ করবেন না। কোনো অনিয়ম দেখলে তা নথিবদ্ধ করাই তাদের কাজ।”
সংলাপে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহও পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব ও সতর্কতার বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, অতীতে যে ধরনের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়েছে, কমিশন সেসব পুনরাবৃত্তি চায় না। তিনি জানান, ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পক্ষপাতমূলক আচরণ কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ভোটার যে এলাকার, সেই এলাকায় কেউ পর্যবেক্ষণে যুক্ত হতে পারবেন না। পাশাপাশি ভুয়া পরিচয় রোধে পর্যবেক্ষকদের পরিচয়পত্রে কিউআর কোড যুক্ত করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা আরও জানান, শিডিউল ঘোষণার দশ দিনের মধ্যেই পর্যবেক্ষকদের তালিকা জমা দিতে হবে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ ফ্রিল্যান্সার পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সময় নির্দিষ্ট প্রটোকল মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিইসি তার বক্তব্যে আবারও স্মরণ করিয়ে দেন, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য একটাই, জাতিকে একটি গ্রহণযোগ্য, সুন্দর এবং স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া। আর এই লক্ষ্য অর্জনে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।