ইমদাদুল হক,,পাইকগাছা,(খুলনা): দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষার অবসান হলো পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস. এম. এনামুল হকের। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কারের পর অবশেষে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রবিবার (২৩ নভেম্বর ২০২৫) কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়—এস.এম. এনামুল হকের বিরুদ্ধে পূর্বে আরোপিত সকল ধরনের শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হলো এবং তিনি পুনরায় দলের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে তার সাংগঠনিক অধিকার ফিরে পেলেন। একই সঙ্গে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সব ধরনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
গত বছর ১০ আগস্ট ২০২৪ তারিখে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সদস্য সচিব এস.এম. মনিরুল হাসান বাপ্পীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে এনামুল হককে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে সংগঠনের ভেতর শুদ্ধি অভিযান চালাতে গিয়ে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বহিষ্কারের পর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়। এনামুল হক পরে দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেন।
সকল অভিযোগ, ব্যাখ্যা এবং পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনার পর কেন্দ্রীয় বিএনপি তা গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়
বহিষ্কারাদেশ সত্ত্বেও এনামুল হক পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন কার্যক্রমে সবসময় সক্রিয় ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি, আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে সাংগঠনিক বৈঠক—সব ক্ষেত্রেই তিনি নিজের উপস্থিতি বজায় রেখেছেন।
তার নেতৃত্বে বিশ্বাসী দলীয় নেতাকর্মীরাও বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে একাধিকবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
এনামুল হকের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা জানান—দলীয় কর্মকাণ্ডের প্রতি তার দায়বদ্ধতা ও দীর্ঘদিনের ত্যাগের কথা বিবেচনা করেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনামুল হকের নেতৃত্বে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।কেউ কেউ এটিকে ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন।
সিদ্ধান্তটি জানানোর পর এনামুল হক দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন—বিএনপি আমার রাজনৈতিক জন্মভূমি। দল আমাকে বিশ্বাস করে আবারও সুযোগ দেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ। পাইকগাছায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।
দলীয় শুদ্ধি অভিযানের পর আবারও নতুন উদ্যমে মাঠে ফেরায় বিএনপির পাইকগাছা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলেও মত ব্যক্ত করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।