অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্বাক্ষরিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের পর তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণের মাধ্যমে স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন। কারণ, তিনি আগে সনদে স্বাক্ষর করেছেন এবং একই ভাষণের মাধ্যমে তা লঙ্ঘন করেছেন।”
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের দিনই চারটি প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণ হবে এবং ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের মাধ্যমে তাদের মতামত জানাবে। জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালেটে উপস্থাপনযোগ্য প্রশ্নও নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রশ্নে উল্লেখিত প্রস্তাবগুলো হলো: নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদ অনুযায়ী গঠন করা হবে। আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট, যেখানে উচ্চকক্ষের ১০০ জন সদস্য নির্বাচিত দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে গঠিত হবে। সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দলের ডেপুটি স্পিকার ও কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাস্তবায়নে বিজয়ী দল বাধ্য থাকবে। এছাড়া অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর মাধ্যমে নিষ্পন্ন হয়েছিল। এটি নতুন করে আরোপ করার কোনও সুযোগ নেই। সংবিধান সংস্কার পরিষদ নামে নতুন কোনো বডি গঠনের বিষয়টি ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ছিল না। এটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা।”
বিএনপি স্থায়ী কমিটি আজ সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ ও জুলাই সনদ লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনা হবে এবং পরে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।