হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আগামী তিন দিনের সব অতিরিক্ত (নন–শিডিউল) ফ্লাইটের চার্জ মওকুফ করেছে সরকার। রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরের সর্বশেষ পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাতের পর বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। মোট ৩৭টি ইউনিটের তৎপরতায় রাত ৯টার কিছু পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। উপদেষ্টা জানান, এ ঘটনায় ২১টি ফ্লাইট বাতিল বা অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে, তবে রাত ৯টা নাগাদ ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সব অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা—তা খতিয়ে দেখা হবে। এজন্য একটি ক্যাটালগিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা আগুনের পূর্ববর্তী ও বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দেবে। তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দর একটি কি-পয়েন্ট ইনস্টলেশন এলাকা, এখানে নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপণের নিজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যত অভিযোগ এসেছে, আমরা সবকিছু যাচাই করে ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘আগামী তিন দিনের সব অতিরিক্ত ফ্লাইটের মাশুল ও খরচ মওকুফ করা হয়েছে। যাত্রীদের খাওয়াদাওয়া, থাকা এবং অন্যান্য সেবার দায়িত্ব সরকার নিয়েছে। আমরা সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করব, যেন পণ্য সরবরাহে কোনো জটিলতা না হয়।’
সরকার জানিয়েছে, এখন থেকে শুক্রবার ও শনিবারও আমদানি পণ্য ছাড় করা যাবে এবং ছাড়ের সময়সীমা ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নামিয়ে আনা হবে। সাময়িক বিকল্প হিসেবে থার্ড টার্মিনাল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলেছে, এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিকেলে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্টের কাজ চলছে। খাতভিত্তিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল রাত ৯টার মধ্যে বিমানবন্দর সচল করা, আমরা তা পেরেছি। যাত্রীদের কষ্টের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’