বিদেশ : গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু হতেই স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সংঘর্ষে নতুন উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। এরমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে একটি ভিডিও, যেখানে আটজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড স্টাইলে হত্যার দৃশ্য দেখা যায়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশ পরা একদল সশস্ত্র ব্যক্তি অনেক মানুষের সামনেই চোখ বাঁধা আটজন মানুষকে হত্যা করছে। হত্যাকারীদের কয়েকজনের মাথায় হামাসের সবুজ পট্টি বাঁধা ছিল। বিশ্লেষকদের ধারণা, ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হামাস চরম নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ভিডিওর ঘটনাস্থল গাজা সিটির আল-সাবরা পাড়া। তবে হত্যাকাণ্ডের নির্দিষ্ট দিনতারিখ বলা সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরই এটি ঘটেছে, কারণ কিছুদিন আগেও ওই এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান করছিল। এছাড়া, হত্যাকারী ও বন্দিদের পরিচয় স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি সিএনএন। তবে হামাস ও আল-সাবরাভিত্তিক প্রভাবশালী দগমুশ চক্রের সংঘর্ষের পর ভিডিওটি সামনে আসে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন বন্দিকে হাত বাঁধা অবস্থায় টেনে এনে চত্বরে দাঁড় করানো হচ্ছে। তাদের কেউ আংশিকভাবে পোশাকহীন ও পা ছিল খালি। বন্দিদের সারিবদ্ধ করার সময় হামাসের কয়েকজন সদস্য তাদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। বন্দিদের গুলি করে হত্যার হামাস সদস্যদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থা আল-মিজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ঘটনাটিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে নিন্দা জানিয়েছে। দ্রুত ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি তুলেছে তারা। এদিকে, হামাস সংশ্লিষ্ট আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘রাদা’ জানিয়েছে, তারা গাজা সিটির কেন্দ্রে একটি সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিচালনা করেছে। সে সময় কয়েকজন দাগী ব্যক্তি ও অপরাধীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ পেশ করেনি রাদা। তারা আরও দাবি করেছে, তারা গাজা সিটির কয়েকটি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গোলাগুলি, বাস্তুচ্যুতদের হত্যা ও বেসামরিকদের হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কার্যালয় থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হামাসকে এই অপরাধের জন্য দায়ী করেছে। সিএনএনের আগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসের সামরিক শাখার এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডারের ছেলের মৃত্যুকে ঘিরে সর্বশেষ সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে হামাস সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেলে দাবি করা হয়েছিল। আল-মিজান জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর শুক্রবার গাজা সিটির সাবরা ও তেল আল-হাওয়া এলাকায় স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। তথ্যসূত্র: সিএনএন