সর্বশেষ :
মোরেলগঞ্জ শ্রমিক  দলের  সাধারণ সম্পাদকের  পিতার ইন্তেকাল কচুয়ায় ১৭ বছর পরে যুব দলের মিছিল-সমাবেশ সাংবাদিকদের পারিশ্রমিক নিয়ে উপ-প্রেস সচিবের দীর্ঘ বার্তা ব্যানার টানানো নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১, আহত ৮ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আনসার ব্যাটালিয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরলেও নির্বাচন এ সরকারের অধীনেই: শিশির মনির বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণে মারাত্মক ঝুঁকিতে দেশের সবগুলো বিমানবন্দর মোরেলগঞ্জে সাড়ে ৩ কোটি টাকায় নির্মিত অত্যাধুনিক সাইক্লোন শেল্টারের উদ্বোধন (ফলোআপ):কুতুবদিয়ায় বাপ্পী হত্যা: ৯ জনের নামে মামলা মোরেলগঞ্জে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে জার্মান সরকারের সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

বরখাস্ত, বদলি ও দুদক হয়রানির ভয়ে আতঙ্কিত এনবিআরের কর্মকর্তারা

প্রতিনিধি: / ৩০ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরাজ করছে বরখাস্ত, বদলি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের হয়রানির ভয়। এনবিআরে আন্দোলন থেমে গেলেও শাস্তির খড়্গ থেমে নেই। বরং আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসরে। আর বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাছাড়া রাজস্ব খাতের দুই ক্যাডারের ৬৩৩ জন কর্মকর্তাকে সারা দেশের নানা প্রান্তে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। তার মধ্যে আয়কর ক্যাডারের ৩৭৫ জন এবং কাস্টমস ক্যাডারের ২৫৯ জন কর্মকর্তা রয়েছে। পাশাপাশি এনবিআরের দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তারা এখন আতঙ্কিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এনবিআরের পাঁচজন উপকর কমিশনারকে গত জুনে বদলির আদেশ দেয়া হয়। কোনো কারণ ছাড়াই ওই কর্মকর্তাদের বদলি করায় অন্য কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২৭ জনকে এনবিআর সাময়িক বরখাস্ত করে। আর আন্দোলন চলাকালে দাপ্তরিক কাজে বাধা দেয়ার কারণ দেখিয়ে ৯ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারপর বিভিন্ন সময়ে আরো ৬০০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জুলাই একযোগে ৪২ জন যুগ্ম কর কমিশনার, ১৫ জুলাই ১১ জন কাস্টমস কমিশনার, ৩১ জুলাই ২৪ জন যুগ্ম কমিশনার ও ২৫ জন অতিরিক্ত কমিশনার, ১২ আগস্ট ৮৭ জন সহকারী কমিশনার ও ৭৩ জন উপকমিশনার, ১৩ আগস্ট ১৯ জন কর কমিশনার ও ১০ জন কাস্টমস কমিশনার, ১৪ আগস্ট ৮৪ জন উপকর কমিশনার ও দুই কাস্টমস কমিশনার, ১৮ আগস্ট ১২৯ জন সহকারী কর কমিশনার, ১৯ আগস্ট ৪১ জন অতিরিক্ত কর কমিশনার, ২০ আগস্ট ৫৩ জন সহকারী কর কমিশনারকে বদলি করা হয়। আর সর্বশেষ গত বুধবারও আয়কর বিভাগের ২২৫ জন কর পরিদর্শককে একযোগে বদলি করা হয়েছে। এনবিআরের কর প্রশাসন-২ শাখার দ্বিতীয় সচিব স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। আর আগস্টের শুরুর দিকে একজন সদস্যগ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-২ পদে পদোন্নতি পান। পাশাপাশি তদবির করে এবং আন্দোলনের বিপক্ষের শক্তি প্রমাণ করে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ ও বদলি বাগিয়ে নিয়েছেন।

সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে এনবিআরের অনেক কর্মকর্তারই কপাল খুলে যাচ্ছে। সেখানে এখন নিজেদের পক্ষের মনে করা হলে ভালো ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হচ্ছে আর বিপক্ষের মনে করা হলেই ঢাকার বাইরে পাঠানো হচ্ছে। সেজন্য বদলি করা হচ্ছে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রকল্পেও। আর অনিয়মের দায়ে শাস্তি পাওয়া কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত পাচ্ছেন। যদিও বিভিন্ন অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জেরার মুখে পড়েছে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা। তাতে রাজস্ব আদায়ে সরাসরি বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিদায়ী অর্থবছরে ৯২ হাজার কোটি টাকার বড় রাজস্ব ঘাটতির পর চলতি বছরের প্রথম মাসেও তিন হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছে। আন্দোলন থামার ক্ষেত্রে প্রতিহিংসামূলক আচরণ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এখন কমবেশি প্রতিদিনই সাময়িক বরখাস্ত ও বদলি করা হচ্ছে। আর ওই রাজস্ব আদায়কারী ওই প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর ও বিভিন্ন কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের কাজে ধীরগতি নেমে এসেছে। কাজে স্বতঃফূর্ত মনোভাব নেই। বরং প্রতিটি মুহূর্তে চাকরি হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত কর্মঅকর্তারা।

এদিকে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মতে, রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে এমন অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা রয়েছে। এনবিআর কর্মকর্তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। কারণ শঙ্কা থাকলে এনবিআর কর্মকর্তারা মনস্তাত্ত্বিক চাপে পড়বেন। মানসিক অবস্থা দুর্বল থাকলে রাজস্ব আদায়ে অবশ্যই প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে যারা কোনো অনিয়ম করেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না। আবার যারা দুর্নীতি-অনিয়ম করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এনবিআরে আন্দোলন থেমে যাওয়ার পর সরকার কথা রাখেনি।

এদিকে এ বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান জানান, কর্মকর্তাদের আতঙ্কে থাকার কোনো কারণ নেই। তাদের আতঙ্কগ্রস্ত না হতে বলা হয়েছে। কেউ আতঙ্ক ছড়ালে মেসেজ দিতে বলা হয়েছে। আর কোনো তালিকা করা হচ্ছে না এবং কিছু হবে না। সরকার চায় সবাই সক্ষমতা অনুযায়ী পুরোপুরি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন।


এই বিভাগের আরো খবর