সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘প্লট দুর্নীতি’ মামলার রায় অক্টোবর-নভেম্বরে হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে টিআইবির সঙ্গে পাঁচ বছরের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানান, হাই কোর্টে স্থগিত থাকা টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট জালিয়াতি মামলাও সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা বর্তমানে চলমান। আমরা আশা করছি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অক্টোবরের শেষ দিকে বা নভেম্বরের প্রথম দিকে আদালত রায় ঘোষণা করবেন।” তিনি আরও জানান, টিউলিপ সিদ্দিকের মামলায় উচ্চ আদালতের স্টে অর্ডার ভ্যাকেট করার প্রক্রিয়া চলমান। ভ্যাকেট হয়ে গেলে মামলাটি এগিয়ে যাবে।
মামলাগুলো রাজধানীর দুই বিশেষ জজ আদালতে পরিচালিত হচ্ছে। ৩১ জুলাই আদালত শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের সন্তানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর মধ্যে তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ১১ আগস্ট, আর বাকি তিন মামলায় শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ১৩ আগস্ট। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এই পরিবারের সদস্যরা বিদেশে অবস্থান করছেন, ফলে পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা করতে পারছেন না।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, কমিশনের ভেতরের দুর্নীতি দূর করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, “দুদক অফিস যদি দুর্নীতিমুক্ত না হয়, তবে অন্য অফিসের দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলার নৈতিক অধিকার নেই। গণমাধ্যম এই ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।”
তিনি স্বীকার করেন, তদন্ত কাজের মধ্যে অনেকগুলো ঝুলে আছে। “১২০০ জন কর্মী থাকলেও সবাই সমান দক্ষ নয়। দেশের জনসংখ্যা অনেক বড়, তাই মামলার চাপও বেশি। ২০০৪ সালের আগের কিছু মামলাও এখনও ঝুলে আছে। সীমাবদ্ধতা স্বীকার করছি, তবে যত দ্রুত সম্ভব মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চলছে।”
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুদকের পক্ষে মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ এবং সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম উপস্থিত ছিলেন। টিআইবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।