ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে নানা অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) সমর্থিত প্যানেল সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। অভিযোগের মধ্যে মূলত ভোটারদের স্বাধিকার সীমিত করা, ব্যালট পেপারের ক্রমিক নম্বর না থাকা, ভোটার তালিকায় ভুয়া স্বাক্ষর ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার অভাবের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান আবিদ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, তাদের পাশে থাকব। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আজকের সংবাদ সম্মেলন।” তিনি অভিযোগ করেছেন, সদ্য অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিলেও প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং কিছু গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভোটার উপস্থিতির আগেই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর দেওয়া এবং নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট পেপার সরবরাহ, ব্যালট পেপারে ক্রমিক নম্বর না থাকায় কারচুপির সুযোগ তৈরি হওয়া, এবং ছাপাখানায় বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপারের অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া। এছাড়া ভোট গণনার মেশিন ও সফটওয়্যার যাচাই প্রক্রিয়ায় প্রার্থী ও ভোটারদের অবহিত না করা, পোলিং এজেন্টদের তালিকা ও আইডি কার্ড বিতরণে বিলম্ব এবং নির্ধারিত কেন্দ্রের চেয়ে হঠাৎ আরও বেশি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার অভিযোগও উত্থাপিত হয়েছে। বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইড সদস্যদের সহায়তায় বহিরাগতদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ আসে। এছাড়া অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং দুপুরের পর মার্কার পেন ফুরিয়ে যাওয়ায় ভোটারদের বলপেন ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়, যা গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
আবিদুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এসব বিষয়ে অবহিত করা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি মন্তব্য করেন, “এই নির্বাচন ইতোমধ্যেই ইতিহাসের পাতায় একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের রূপ ধারণ করছে।”
ছাত্রদল আরও জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র অভিযোগ উত্থাপন নয়, বরং প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পথে ফিরিয়ে নিয়ে যথাযথ তদন্তপূর্বক সত্য প্রকাশ নিশ্চিত করা।