বিদেশ : থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে আনুতিন চার্নভিরাকুল দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর, বর্তমান ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টির নেতা পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তিনি। ৫৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিক ভুমজাইথাই পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। গত মাসে নৈতিকতা-সংক্রান্ত এক কেলেঙ্কারির কারণে সাংবিধানিক আদালত পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করে। আনুতিন জনগণপন্থী ফেউ থাই প্রার্থি চাইকাসেম নিতিসিরিকে পরাজিত করেন, যেখানে তিনি উদারপন্থী পিপলস পার্টির সমর্থন পান। পার্লামেন্টের বৃহত্তম দলটির এই সমর্থন আসে আনুতিনের চার মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আহ্বানের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে। ভূমজাইথাই নেতা ৩১১ ভোট পেয়ে জোরালো জয় অর্জন করেন, যা প্রতিনিধি পরিষদের ৪৯২ সক্রিয় সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজনীয় ২৪৭ ভোটের অনেক উপরে। চাইকাসেম পান ১৫২ ভোট, আর ভোটদান থেকে বিরত থাকেন ২৭ জন। ফেউ থাই পার্টির সদস্য ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী চালের্ম ইউবামরুং সবাইকে চমকে দিয়ে বিপরীত পক্ষে ভোট দেন। রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়ার পর কয়েক দিনের মধ্যেই আনুতিন ও তার সরকার দায়িত্ব নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৫৮ বছর বয়সী অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ আনুতিনের এই বিজয় শিনাওয়াত্রা বংশের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা, যারা গত দুই দশক ধরে থাই রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। জনগণপন্থী এই পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সেনা-পন্থী ও রাজতন্ত্র-পন্থী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে আসছে, তবে সামপ্রতিক বছরগুলোতে আইনি ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোটের আগে শিনাওয়াত্রা পরিবারের কর্ণধার থাকসিন সিনাওয়াত্রা দেশ ছেড়ে দুবাই চলে যান। ২০২৩ সালের আগস্টে নির্বাসন থেকে ফেরার পর হাসপাতালে তার অবস্থান নিয়ে চলমান এক মামলায় আগামী মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দেবে। এই রায় তার আগাম মুক্তির বৈধতায় প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু বিশ্লেষক বলছেন, রায়ের ফলে তাকে আবারও কারাগারে যেতে হতে পারে। থাকসিন সামাজিক মাধ্যমে জানান, তিনি দুবাই থেকে ফিরে এসে আদালতে নিজে উপস্থিত থাকবেন। একসময় আনুতিন ফেউ থাই জোটের সমর্থক ছিলেন, তবে গত গ্রীষ্মে প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের সময় পায়েতংতার্ন (থাকসিনের কন্যা ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী) এর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি জোট থেকে বেরিয়ে আসেন। সাংবিধানিক আদালত ২৯ আগস্ট রায় দেয় যে পায়েতংতার্ন মন্ত্রীসভার নৈতিকতা লঙ্ঘন করেছেন এবং মাত্র এক বছরের মধ্যেই তাকে পদচ্যুত করে। বর্তমানে ফেউ থাই দল অন্তর্বর্তীকালীন ভিত্তিতে ক্ষমতায় রয়েছে। গতকাল শুক্রবারের ভোট ঠেকাতে দলটি শেষ মুহূর্তে রাজপ্রাসাদকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ জানায়।