বিদেশ : ইউক্রেনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে গতরাতে রাশিয়া ‘বিশাল’ হামলা চালিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার তেল শোধনাগারগুলোতে হামলা চালিয়েছে কিয়েভ। স্থানীয় কর্মকর্তারা জনিয়েছেন, জাপোরিজিয়ায় এক নারী নিহত হয়েছেন এবং ২৮ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মস্কো ৫০০টিরও বেশি ড্রোন ও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা দেশব্যাপী ১৪টি অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। যুদ্ধ শেষ করার চলমান আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মধ্যেই এ হামলা হয়েছে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়। দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলটি পরপর দুই রাত লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে কিয়েভ স্বীকার করে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী এই অঞ্চলে প্রবেশ করেছে এবং একটি ভিত্তি স্থাপনের চেষ্টা করছে। আঞ্চলিক গভর্নর সেরহি লাইসাক জানিয়েছেন, অঞ্চলটি ‘বৃহৎ আক্রমণের মধ্যে’ রয়েছে। পাশাপাশি তিনি মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন। এ ছাড়া কিয়েভের নিকটবর্তী রেল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়েছে ইউক্রেনের মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। জাপোরিঝিয়ায় জরুরি সেবা সংস্থার কর্মীদের আগুন নেভাতে দেখা গেছে এবং মধ্য-পূর্বাঞ্চলের দিনিপ্রো ও পাভলোহ্রাদ এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা রাতে রাশিয়ার ক্রাসনোদার ও সিজরান তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে। দুটি শোধনাগারেই এর আগেও হামলা হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, সেখানে ‘অসংখ্য বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড দেখা গেছে’, যা বছরে ৩০ লাখ টন তেল উৎপাদন করে। এ ছাড়া ক্রাসনোদারে রুশ কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, কিয়েভ থেকে ড্রোন হামলায় তাদের তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখানে আগুন লেগেছে। তবে কোনো হতাহতের তথ্য নেই। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, তারা রাতের মধ্যে ২০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ১৮টি ক্রিমিয়ায়। যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে এই লড়াই যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর এলো, যা এ পর্যন্ত স্থবির অবস্থায় রয়েছে। জেলেনস্কি বলেছেন, সামপ্রতিক আক্রমণ রাশিয়ার ‘কথার প্রতি অবজ্ঞা’ প্রদর্শন করছে। রাশিয়াকে মোকাবেলা করার একমাত্র পথ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও সমগ্র বিশ্বের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তারা ইউক্রেনের বিমান নিক্ষিপ্ত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির সম্ভাব্য অনুমোদন দিয়েছে, যা দেশের শহরগুলোকে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।