সর্বশেষ :
ফলোআপ: পাইকগাছায় কোটিপতির ভবন রক্ষায় সড়ক সরলীকরণ না হয়ে হচ্ছে বাঁকা: নকশা পরিবর্তন ও মাদ্রাসা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন পাইকগাছায় আমন ধানের ফলন ভাল হলেও ধানের মূল্য কম হওয়ায় কৃষক হতাশ ডেইলি স্টার অফিসে হামলা-ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয় ভাংচুর করে নথিতে আগুন দিলো বিক্ষুদ্ধ জনতা হাদি হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার শাহবাগ অবরোধ চট্টগ্রামে রাতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলা, আটক ৮ ছায়ানটের ভেতরে পোড়া বই আর ভাঙা বাদ্যযন্ত্র, বাইরে কড়া পুলিশ পাহারা আজ সন্ধ্যায় দেশে আসবে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ, জানাজা শনিবার জব্দ রুশ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা লুকানো কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বাড়াচ্ছে ইউক্রেন
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

রোডম্যাপ ঘোষণা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের

প্রতিনিধি: / ৯৫ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশের সমস্ত নির্বাচনী কার্যক্রমকে সুসংগঠিত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনার জন্য বিস্তৃত রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের জানান, রোডম্যাপে মোট ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এগুলো ২০৭ ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।

রোডম্যাপ অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। তফসিল ঘোষণার নির্দিষ্ট তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি, তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ভোটের তারিখের প্রায় দুই মাস আগে তফসিল প্রকাশ করা হবে। ইসি সভায় আলোচনা শেষে জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য নির্বাচনের প্রতিটি ধাপের জন্য সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে কার্যক্রম স্বচ্ছ ও সময়মত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক অনুমোদন, পোস্টাল ভোটিং, প্রবাসী ভোট, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নির্বাচনী দ্রব্যাদি সংগ্রহ, আইসিটি ব্যবস্থা, সচেতনতা কার্যক্রম এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতি।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী আট শ্রেণির অংশীজন—রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। সংলাপের কাজ দেড় মাস ধরে চলবে এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেষ হবে। সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নিশ্চিত করতে হবে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের সম্পূরক খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যা ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া আগামী ১ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে, যা চূড়ান্ত করা হবে ৩০ নভেম্বর। ভোটারদের বয়সগত সীমা অনুযায়ী, আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবেন, তারা নির্বাচনে ভোট দিতে সক্ষম হবেন।

নির্বাচনী আইনবিধির সংস্কারও রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্ত। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও অন্যান্য সংশোধনী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রণয়ন করা হবে। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন, ভোটকেন্দ্র নীতিমালা, দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচন পরিচালনা (সংশোধন) ২০২৫, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯—এসব আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার আশা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধনও রোডম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রাথমিক নিবন্ধন মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে এবং চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন ৩০ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে দেওয়া হবে। এছাড়া সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ ১৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত করা হবে এবং জিআইএস ম্যাপ ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে।

ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত প্রস্তুতি, পোস্টাল ভোটিং, প্রবাসীদের জন্য ব্যালট প্রেরণ এবং কারাবন্দীদের ভোটের জন্য ব্যালট পৌঁছে দেওয়ার বিষয়গুলো অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনী দ্রব্যাদি সংগ্রহ, ব্যালট মুদ্রণ, পোস্টার ও পরিচয়পত্র মুদ্রণ, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং সচেতনতা কার্যক্রমও নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর, এবং ১৫ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অর্থ বরাদ্দ এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, আইসিটি সাপোর্ট, ডিজিটাল মনিটরিং ও বেসরকারি ফলাফল প্রচারের কার্যক্রম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা হবে। প্রবাসীদের ভোটের জন্য ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে পোস্টাল ব্যালটের সব কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই রোডম্যাপ নিশ্চিত করবে ভোটারদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন, কার্যক্রমে প্রশাসনিক সমন্বয় এবং অংশীজনদের পূর্ণ সহযোগিতা। ইসি আশা করছে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।


এই বিভাগের আরো খবর