সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২১ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

জাতিসংঘের ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের কথা স্বীকার করল

প্রতিনিধি: / ১১৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

বিদেশ : গাজা শহর এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলো এখন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন বলে প্রথমবারের মতো স্বীকার করল জাতিসংঘ-সমর্থিত বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (ওচঈ)। বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার মাত্রা চিহ্নিত করার জন্য সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আইপিসি’র মানদণ্ড ব্যবহার করে থাকে। সংস্থাটি খাদ্য সংকটের মানদণ্ডে গাজা শহরকে তাদের শ্রেণীবিভাগে ‘পঞ্চম পর্যায়ে’ উন্নীত করেছে। অর্থাৎ গাজায় খাদ্য সংকট সর্বোচ্চ এবং সবচেয়ে গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। আইপিসি জানিয়েছে, ২২ মাসের সংঘাতের পর পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হচ্ছে। অনাহার, তীব্র অপুষ্টি এবং মৃত্যুহার – এটি একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। আরও ১১ লাখের মতো মানুষ জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে (আইপিসি-চতুর্থ পর্যায়ে আছেন তারা)। সেই সঙ্গে ৩ লাখ ৯৬ হাজার মানুষ সংকটে রয়েছে (আইপিসি পর্যায় তিন-এ)। জাতিসংঘের সংস্থা, এনজিও, কারিগরি সংস্থা এবং আঞ্চলিক সংস্থাসহ ২১টি সংস্থা নিয়ে গঠিত ‘আইপিসি’ গাজা উপত্যকায় তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং তীব্র অপুষ্টি বিশ্লেষণ শুরু করার পর থেকে বর্তমানে সবচেয়ে গুরুতর অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। আইপিসি জানিয়েছে, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ তীব্র অপুষ্টির কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী কমপক্ষে ১ লাখ ৩২ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। ২০২৫ সালের মে মাসে প্রকাশিত আইপিসির আগের অনুমানের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। সেই সঙ্গে অঞ্চলটিতে কমপক্ষে ৪১ হাজার গুরুতর রোগী রয়েছে, যাদের মৃত্যুর ঝুঁকি আরও বেড়েছে। আইপিসি বলেছে, প্রায় ৫৫ হাজার ৫০০ অপুষ্টিতে ভোগা গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো নারীর জরুরি পুষ্টি সহায়তার প্রয়োজন।
মানবসৃষ্ট বিপর্যয়
এদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার দুর্ভিক্ষ একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়, একটি নৈতিক অবক্ষয় এবং মানবতারই ব্যর্থতা। তিনি বলেন, ‘দুর্ভিক্ষ কেবল খাদ্যের জন্য নয়; এটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার ইচ্ছাকৃত পতন। মানুষ অনাহারে আছে। শিশুরা মারা যাচ্ছে। যাদের দায়িত্ব আছে তারা ব্যর্থ হচ্ছে।’জাতিসংঘের প্রধান বলেন, আমরা এই পরিস্থিতিকে দায়মুক্তি দিয়ে চলতে দিতে পারি না। আর কোনো অজুহাত নেই। পদক্ষেপ নেওয়ার সময় আগামীকাল নয় – এখনই।
গণহত্যা চলছেই
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে দেড় লাখের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ২৭ মে থেকে ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করেছে। এতে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ত্রাণ সমপ্রদায় ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।


এই বিভাগের আরো খবর