দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে পৌঁছালেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। সফরে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রয়েছেন, যার মধ্যে জেষ্ঠ্য মন্ত্রী এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও রয়েছেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘তার অবস্থানকালে, পেজেশকিয়ান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে দেখা করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা করবেন’। ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি পেজেশকিয়ানের প্রথম পাকিস্তান সফর। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শেষবার ২৬ মে ইরান সফর করেছিলেন। পেজেশকিয়ানের এই সফর পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইরানের প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক উপদেষ্টা মেহদি সানাইয়ের মতে, ‘সফরে সাংস্কৃতিক ও অভিজাত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বৈঠক এবং আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে আলোচনা হবে’। উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রাদেশিক ও সীমান্ত সহযোগিতার উন্নয়ন, সেইসাথে বর্তমান ৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বৃদ্ধি, এই সফরের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি। পেজেশকিয়ান দুই বছরের মধ্যে পাকিস্তান সফরকারী দ্বিতীয় ইরানি প্রেসিডেন্ট হবেন। এই সফর মূলত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে নির্ধারিত ছিল। ২০২৪ সালের এপ্রিলে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুর মাত্র এক মাস আগে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি তিন দিনের সরকারি পাকিস্তান সফর করেন। মে মাসের শুরুতে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ ভারতের সাথে সংঘাতের সময় তাদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলিতে তার আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসেবে ইরানে দুই দিনের দ্বিপাক্ষিক সফর করেন। দুই দিনের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলি খামেনি এবং ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকগুলোতে পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির উপর আলোকপাত করা হয়, আঞ্চলিক বিষয়গুলিও আলোচনা করা হয়, ভারত কর্তৃক পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের সময় এই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার জন্য ইরানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়। উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি গাজায় ইহুদিবাদী নিপীড়নের তাৎক্ষণিক অবসান এবং একটি টেকসই ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জনের বিষয়েও আলোচনা করে। শাহবাজ শরিফ এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে রাইসির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইরান সফর করেছিলেন।