বিদেশ : মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার দেশে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা জোরদার করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনকে তাদের ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য ব্যবহার করবে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর ফলস্বরূপ দেশটিতে বহুমুখী গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যা হাজার হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এই আদেশ জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে আইনসভা, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের ওপর সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েছিল। তবে তিনি সমপ্রতি নির্বাচনকে সংঘাতের একটি ‘অপ্রীতিকর পরিণতি’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন আইনপ্রণেতাসহ বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত মাসেই জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে সামরিক বাহিনীর অব্যাহত শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত একটি জালিয়াতি বলে অভিহিত করেছেন। জান্তা ২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির অপ্রমাণিত দাবি করে ক্ষমতা দখল করেছিল, যেখানে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল। বর্তমানে সু চি ও তাদের অন্যান্য শীর্ষ নেতা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের সঙ্গে শেয়ার করা একটি ভয়েস বার্তায় বলেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে দেশকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আজ জরুরি অবস্থা বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মিন অং হ্লাইং স্বাক্ষরিত একটি আদেশ জরুরি অবস্থা বাতিল করে, যা তাকে সশস্ত্র বাহিনী প্রধান হিসেবে ক্ষমতা প্রদান করেছিল। এই ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মিন অং হ্লাইং নিজেই দেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সেই পদটি দখল করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমার-এ প্রকাশিত এক বক্তৃতায় মিন অং হ্লাইং বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যেই প্রথম অধ্যায়টি পাস করেছি। এখন, আমরা দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করছি। তিনি জান্তার প্রশাসন পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশ্যে এই কথা বলেন, যা সংবাদপত্রটি তার সদস্যদের জন্য একটি সম্মাননা অনুষ্ঠান বলে অভিহিত করেছে।