গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করায় তা পুনরায় কবর থেকে উত্তোলনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার (১৯ জুলাই) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির জাতীয় সমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এনসিপির অভিযোগ, সমাবেশস্থলে এবং গাড়িবহরে একাধিকবার হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, যারা ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। সংঘর্ষের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও হামলা হয় এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি ও একটি সরকারি কর্মকর্তার গাড়ি।
সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। নিহতদের সবাই গুলিবিদ্ধ ছিলেন বলে জানিয়েছে এনসিপি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হলেও নিহতদের স্বজনরা মরদেহ নিজ উদ্যোগে নিয়ে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তা করা সম্ভব হয়নি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন হওয়ায় মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। এজন্য প্রয়োজনে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, “ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে উঠা প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করবে।
তিনি আরও জানান, গোপালগঞ্জের ঘটনার সময়কার সংবাদ কাভারেজের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। তবে তিনি আহ্বান জানান, যেসব সাংবাদিক সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না, তারা যেন বিভ্রান্তিকর বা ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার না করেন।