সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০০ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ গোপালগঞ্জের রিকশাচালক রমজান মুন্সীর মৃত্যু

প্রতিনিধি: / ৭৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সহিংসতায় আহত রিকশাচালক রমজান মুন্সী অবশেষে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর মধ্য দিয়ে সহিংস এই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো পাঁচজনে।

বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ শহরজুড়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে প্রাণ হারান চারজন। তারা হলেন—মোবাইল ফোন যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা (৩৫), পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা (২৫), সিরামিক দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার (১৭) এবং রাজমিস্ত্রির সহযোগী রমজান কাজী (১৮)। এদের সবার দাফন ও শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই।

নিহত রমজান মুন্সী গোপালগঞ্জ সদর থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন রিকশাচালক ছিলেন। তার ভাই হীরা মুন্সী জানান, বুধবার দুপুরে রমজান গোপালগঞ্জ শহরের সিনেমা হলের পাশে রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফিরছিলেন। সেই সময় হঠাৎ সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান এবং গুলিবিদ্ধ হন। রমজানের ডান হাতের কব্জির ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে রাতেই তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে নিশ্চিত করেন যে, রমজান মুন্সী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

এ ঘটনায় এখনো ঢামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি—সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০)। তারা ঢামেকের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এনসিপির জুলাই মাসব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে বুধবার বিকেলে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষ করে শহর ছাড়ার সময় এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে হামলা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই হামলা চালান আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সংঘর্ষে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সংঘাতের এক পর্যায়ে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

ঘটনার দিন থেকেই গোপালগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। পরে সন্ধ্যায় কারফিউ ঘোষণা করলেও সহিংসতা পুরোপুরি থামানো যায়নি। সহিংস পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে এনসিপির শীর্ষ নেতারা গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে তাদের খুলনায় স্থানান্তর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় কোনো মামলা হয়নি। এতে পুরো ঘটনার বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।


এই বিভাগের আরো খবর