শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ জনে, নিখোঁজ ৪১

প্রতিনিধি: / ২২ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে। প্রাণঘাতী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ জনে, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৪১ জন। টানা তিনদিনের টানা বর্ষণ, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং হঠাৎ সৃষ্ট ভয়াবহ প্লাবন টেঙ্াসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযানের জন্ম দিয়েছে। এখনও চলছে তীব্র উদ্ধারকাজ।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার প্রবল বর্ষণের কারণে স্যান অ্যান্টোনিও শহরের গুয়াদালুপ নদীর পানি প্রায় নয় মিটার বা ২৯ ফুট বেড়ে যায়। নদীর আশপাশের এলাকা হঠাৎ তলিয়ে যায়। বিশেষ করে নদীর তীরে অবস্থিত ক্যাম্প মিস্টিক নামের একটি খ্রিষ্টান গ্রীষ্মকালীন শিবিরে বিপর্যয় নেমে আসে। সেখানে অবস্থান করছিল ৭৫০ শিশু। কার কাউন্টির শেরিফ ল্যারি লেইথা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, সেখানে মৃতদের মধ্যে ২৮ জনই শিশু। বন্যার পানি সরে যেতে শুরু করলে গত শনিবার ওই এলাকা থেকে প্রায় ৮৫০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শেরিফ লেইথা আরও জানান, কার কাউন্টিতেই ৬৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ছাড়া ট্রাভিস কাউন্টিতে ৬ জন, বার্নেট কাউন্টিতে ৩ জন, কেনডাল কাউন্টিতে ২ জন, উইলিয়ামসন কাউন্টিতে ২ জন এবং টম গ্রিন কাউন্টিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও ক্যাম্প মিস্টিক থেকে ১০ জন শিশু এবং একজন কাউন্সিলর নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার হওয়া ১৮ জন যুবক ও ১০ শিশুর পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
টেঙ্াসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট গত রোববার জানিয়েছেন, নিখোঁজ প্রত্যেককে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি সতর্ক করেছেন, আরও কয়েক দফা ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা নতুন করে বন্যার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এছাড়া ধ্বংসাবশেষ, কাদা এবং বিষধর সাপ উদ্ধারকর্মীদের কাজকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
কার কাউন্টির কাছের শহর কারভিলের নগর ব্যবস্থাপক ডাল্টন রাইস আলজাজিরাকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এক হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী মাঠে আছেন। উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার, ড্রোন এমনকি মার্কিন কোস্টগার্ডের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। অনেক মানুষকে গাছের উপর থেকে উদ্ধার করতে হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। তিনি বলেছেন, “এটি ভয়াবহ একটি ঘটনা। টেঙ্াসের মানুষের জন্য আমাদের প্রার্থনা রইল।” তিনি আগামী শুক্রবার টেঙ্াস সফরের সম্ভাবনার কথাও জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ভয়াবহ স্রোতের তোড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে গেছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে কার এলাকায় ১২ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা সেই অঞ্চলের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ।
টানা এই দুর্যোগের মধ্যে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজ চলছে, তবে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা এবং নিখোঁজদের সংখ্যা উদ্ধারকর্মীদের চরম চাপে ফেলেছে।

 


এই বিভাগের আরো খবর