ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা চেরী এ মুহূর্তে ঈদের সিনেমা ‘টগর’ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত রোববার এসেছে সিনেমাটির টিজার। এ সিনেমার প্রচারে যাওয়ার সময় ‘টগর’সহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন অভিনেত্রী। ঈদে বেশ কয়েকটি সিনেমা আসছে, আপনার চিন্তা হচ্ছে না?-এমন প্রশ্নের উত্তরে পূজা চেরী বলেন, একদমই চিন্তা করছি না। আমার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা হলে হয়তো চিন্তা হতো। ‘পোড়ামন ২’ সিনেমার সময় যেমনটি হয়েছিল। তিনি বলেন, চিন্তায় তখন ঘুমাতেও পারিনি। তবে এখন সিনেমাটি নিয়ে ওভার কনফিডেন্টও নই। অভিনেত্রী বলেন, আমি খুশি, একসঙ্গে অনেক সিনেমা মুক্তির তালিকায় রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে আছি। রোমাঞ্চ কাজ করছে। একসঙ্গে একাধিক সিনেমার মুক্তিকে ইতিবাচকভাবে হিসাবে দেখছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এখন বদলে যাচ্ছে। এখানে যত বেশি সিনেমা মুক্তি পাবে, দর্শক তত নতুনত্ব পাবে। সিনেমার দর্শক বাড়বে। অন্য একটি সিনেমার দর্শক বাড়লে আমার সিনেমার দর্শকও বাড়বে। পূজা চেরী বলেন, এখানে আমার কারও সঙ্গে কোনো তুলনা নেই। আমি চাই সবাই এগিয়ে যাক, ভালো করুক। বেশি বেশি সিনেমা হোক। তাহলে আমাদের পরিসর বড় হবে। তখন প্রযোজকরা আরও নিয়মিতভাবে কাজ করবেন। ‘টগর’-এর টিজারে আপনার চরিত্র নিয়ে একটা রহস্য রাখা হয়েছে…। অভিনেত্রী বলেন, সিনেমার গল্পটি আমার পছন্দের। গল্পের সঙ্গে শুরু থেকেই যুক্ত হয়েছি, অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে, তারপরই আমরা কাজ করেছি। সেখানে আমার চরিত্রটি একদমই আলাদা। তিনি বলেন, দর্শক হয়তো এটুকু বুঝতে পারবে, মেয়েটি বঞ্চিত হয়, লাঞ্ছিত হয়, কিন্তু মুখ বুজে সহ্য করে না, প্রতিবাদী একটি মেয়ে; এসব সত্ত্বেও আসল রহস্য দর্শক সিনেমা হলে গিয়েই দেখুক। পূজা চেরী বলেন, এখানে দর্শক শুধু আমার চরিত্র দেখে আগ্রহী হবে না। সিনেমার গল্প দেখবে। সিনেমার গান, লোকেশন, অ্যাকশনসহ অন্যান্য চরিত্র, তাদের অভিনয়-ফুল প্যাকেজে দর্শক খুশি হলেই কিন্তু সিনেমাটি দেখবে। এটুকুই বলব, দর্শকদের খুশি করার সব উপকরণ আমাদের সিনেমায় রয়েছে। এটাই আমাদের আস্থার জায়গা। এ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে আপনাকে নাকি অনেক পান খেতে হয়েছে?-এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, সিনেমাটির চিত্রনাট্য পাওয়ার পর পরিচালকসহ আমরা বসে আরও কিছু পরিকল্পনা করেছি। নাহলে হয়তো আমি এই সিনেমায় অভিনয় করতাম না। পূজা চেরী বলেন, সিনেমার প্রয়োজনে আমার আলাদা কথা বলার ধরন, আলাদা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, মেয়েটি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। সেগুলো মাথায় রেখে একসময় মনে হয়, আমার চরিত্রটি পান খেতে পারে। পুরো গল্পে মুখে পান থাকবে, ঠোঁট লাল হয়ে থাকবে-এমনটি দর্শক দেখবেন। তিনি বলেন, পরিচালকের সঙ্গে পরামর্শ করে এটি আমিই যুক্ত করেছি চরিত্রে। সব সময় ডজন ডজন পান এনে রাখা হতো। প্রথম দিকে পান খেতে পারছিলাম না, পিক ফেলতে পারছিলাম না। এগুলো শিখতে হয়েছে। পান খেয়ে ওই সময়ে আমি আর কিছুই খেতে পারিনি। পুরো মুখের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একদিন চুনসহ ৩০টি পান খেতে হয়েছে। এখন পান খেতে আর ভয় পাই না বলে জানান পূজা চেরী। ঈদের ছবির প্রচারণায় একসঙ্গে সবাই নেমে পড়েছেন। এতে করে কোনো বাধা তৈরি হয় কিনা? অভিনেত্রী বলেন, আগে সব সিনেমার জন্য শুভকামনা। এখন প্রতিটি সিনেমার প্রমোশনের আলাদা শিডিউল রয়েছে। দেখা গেল, একসঙ্গে একেক সিনেমার টিজার, ট্রেলার ও গান মুক্তি পাচ্ছে। এগুলোকে আমি সাংঘর্ষিক মনে করি না। চাই, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকুক। উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকুক। সিনেমায় আপনার চরিত্রের নাম জয়িতা। চরিত্রটির সঙ্গে আপনার কোনো মিল আছে? অভিনেত্রী বলেন, একটা মিল শতভাগ আছে। আমার আসল নামও জয়িতা। নামটা আমার মা রেখেছিলেন। শৈশবে আমাকে সবাই জয়িতা বলেই ডাকত। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত নাম ছিল, জয়িতা রায় পূজা। পরে বাবা নামটা পূজা চেরী রায় করে দেন। তবে বেশিরভাগই সবাই পূজা নামে ডাকে। এ ছাড়া পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা জয়িতা নামেও ডাকে। কারও কাছে আমি পূজামণিও। গত বছরের ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘লিপস্টিক’ থেকে এবারের ‘টগর’- এই জার্নির মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কী ছিল?-এমন প্রশ্নের উত্তরে পূজা চেরী বলেন, আমি মায়ের কথা বলব। দুটি সিনেমার সময়েই মাকে খুব করে কাছে চেয়েছি। লিপস্টিকের শুটিংয়ের শুরুতে মা ছিলেন। শেষে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। মনে হয়েছে, সিনেমাজুড়েই মা আমার পাশে ছিলেন। ঈদে শাকিব খানের মুখোমুখি হচ্ছেন। ‘গলুই’ সিনেমার পর আপনাদের আবার কবে একসঙ্গে দেখা যাবে?-এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, এটা নিয়ে এখন কিছুই বলতে চাই না। এখন আমি ‘টগর’ সিনেমার প্রচার নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। যখন বলার মতো কিছু হবে, তখন বলব। এখন মাথায় শুধু নিজের সিনেমা।
https://www.kaabait.com