বিদেশ : দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সোনার খনির নিচে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে পড়ে ছিল ২৬০ জন খনিশ্রমিক। অবশেষে গত শুক্রবার সব খনিশ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে খনির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার জোহানেসবার্গের ৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত ক্লুফ সোনা খনিতে একটি দুর্ঘটনার কারণে খনির গভীরে ওঠানামার জন্য ব্যবহৃত একটি হোইস্ট বা উত্তোলনযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় শ্রমিকরা নিচে আটকে পড়েন। উদ্ধারের প্রথম ধাপে ১টা ৩০ মিনিটে ৭৯ জনকে ওপরে তোলা হয় এবং বাকি শ্রমিকদের প্রায় ছয় ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয় বলে সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঘটনার সময় কোনো পর্যায়েই শ্রমিকদের জন্য আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি ছিল না।’ এই সোনা খনিটি জোহানেসবার্গ স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কম্পানিটির অন্যতম গভীর খনি। উদ্ধারকাজ চলাকালে খনির বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনরা অপেক্ষা করছিলেন। সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার জানিয়েছে, ‘প্রয়োজনে সব ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীকে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় আনা হবে এবং একই সঙ্গে তাদের পরিবারদেরও সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মাইনওয়ার্কার্স জানিয়েছে, এই ঘটনা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটে। তারা শ্রমিকদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যারা ‘প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে খনির নিচে অবস্থান করছিলেন।’ এর আগে সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার জানিয়েছিল যে, গত শুক্রবার মধ্যাহ্নের দিকে শ্রমিকদের ওপরে তোলা হবে। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হেনরিকা নিনহ্যাম বলেন, ‘কর্মীরা আটকে পড়েননি, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে আপাতত তাদের সাব-শ্যাফট স্টেশনে রাখা হবে।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় খনিশিল্পে লাক লাখ মানুষ কর্মরত রয়েছেন। দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম প্লাটিনাম রপ্তানিকারক এবং সোনা, হীরক, কয়লা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থেরও অন্যতম রপ্তানিকারক। তবে খনিতে দুর্ঘটনা সাধারণ ঘটনা। প্রতি বছরই বহু খনি শ্রমিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান, যদিও গত দুই দশকে নিরাপত্তা মান বাড়ানোর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার খনিশিল্প সংগঠন মিনারেলস কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৪২ জন খনি শ্রমিক মারা গেছেন, যেখানে আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৫৫। সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটারের প্রধান নির্বাহী নিল ফ্রনেম্যান শুক্রবার জানান, ‘যতক্ষণ না আমরা নিশ্চিত হচ্ছি যে প্রয়োজনীয় সব প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত খনির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে না।’ সূত্র : এএফপি
https://www.kaabait.com