আন্তার্জতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান সংকট এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার মতে, এসব সংস্থা আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পডকাস্ট হোস্ট লেক্স ফ্রিডম্যানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, “যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা বহু দশক আগে গঠিত হয়েছিল, সেগুলো আজ কার্যত তাদের ভূমিকা হারিয়ে ফেলেছে। জাতিসংঘের মতো সংস্থা সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ। যারা নিয়ম ভঙ্গ করছে, তাদের প্রতিরোধ করার মতো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই।”
করোনাভাইরাস মহামারির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোদি বলেন, “কোভিড-১৯ আমাদের সবার সীমাবদ্ধতা উন্মোচিত করেছে। আমরা নিজেদের যতই উন্নত বা শক্তিশালী মনে করি না কেন, মহামারির সময় প্রতিটি দেশই নিজেদের দুর্বলতা অনুভব করেছে। তখন মনে হয়েছিল, বিশ্ব এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং আমরা আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রবেশ করেছি, যুদ্ধ এবং সংকট আরও বেড়েছে।”
জাতিসংঘের সংস্কার নিয়ে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সরব। মোদি এর আগেও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তার যুক্তি, ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদ একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই নয় এবং এটি বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান চিত্র যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে ব্যর্থ।
গত বছর জাতিসংঘের ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’-এ মোদি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, “পরিবর্তনই প্রাসঙ্গিকতার চাবিকাঠি। যদি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিজেদের সংস্কার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা বিশ্ব নেতৃত্বের দায়িত্বও হারাবে।”
বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে মোদির এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের বর্তমান কাঠামো আদৌ কার্যকর কি না, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে তার মন্তব্য। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ব কি জাতিসংঘের সংস্কারকে স্বাগত জানাবে, নাকি এই সংস্থার ভূমিকা ক্রমশ কমে আসবে?