বিদেশ : জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষ’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সরকারকে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রতিহত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। শনিবার আন্তর্জাতিক ইসলামবিদ্বেষ প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন গুতেরেস। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গাজার ওপর ইসরায়েলের ১৭ মাসব্যাপী যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসলামবিদ্বেষ, আরববিরোধী মনোভাব এবং ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে চলেছে। গুতেরেস বলেন, ‘আমরা ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষ প্রত্যক্ষ করছি। জাতিগত বিদ্বেষ ও বৈষম্যমূলক নীতি মানবাধিকার ও মর্যাদাকে লঙ্ঘন করছে, যা ব্যক্তিগত সহিংসতা ও উপাসনালয়ের ওপর হামলার রূপ নিচ্ছে। এটি সামগ্রিকভাবে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, চরমপন্থী মতাদর্শ এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণের একটি অংশ।’ নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করেই সরকারগুলোর প্রতি ‘সামাজিক সমপ্রীতি বাড়ানো ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার’ আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য ও হয়রানি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং আমাদের সবাইকে ধর্মীয় বিদ্বেষ, বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’ জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল মোরাতিনোস জানান, মুসলমানরা বর্তমানে ‘প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য ও সামাজিক-অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার’ মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের প্রতি অযৌক্তিকভাবে জাতিগত সন্দেহ, পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন এবং কিছু রাজনৈতিক নেতার ইসলামবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে আরও উসকে দেওয়া হচ্ছে।‘ বছরের পর বছর ধরে মানবাধিকার কর্মীরা ইসলাম ও আরব সমপ্রদায়ের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরির বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। বিশেষ করে, কিছু ব্যক্তি মুসলিম ও আরব সমপ্রদায়ের সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সম্পর্ক তৈরি করে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে। সমপ্রতি বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ইসলামবিদ্বেষী হামলা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর) মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালে ইসলামবিদ্বেষ ও আরব-বিরোধী ঘটনার অভিযোগের সংখ্যা ৮,৬৫৮-এ পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাটির দাবি, ১৯৯৬ সালে তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর থেকে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা।