আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবৈধভাবে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টাকালে জর্ডানের সৈন্যদের গুলিতে এক ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম থমাস গ্যাব্রিয়েল পেরেরা (৪৭), যিনি ভারতের কেরালা রাজ্যের তিরুবনন্তপুরমের থুম্বার বাসিন্দা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি জর্ডানের কারাক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এবং দ্য ইন্ডিয়ান এঙ্প্রেসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
থমাস গ্যাব্রিয়েল পেরেরা এবং তার সঙ্গী এডিসন (৪৩) গত ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যটক ভিসায় জর্ডানে গিয়েছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সেখান থেকে অবৈধভাবে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কাজের সন্ধান করা। জর্ডানে পৌঁছানোর পর তারা বৈধ অনুমতি ছাড়াই ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় জর্ডানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের থামাতে বলে, কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করলে সৈন্যরা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে থমাস ঘটনাস্থলেই মারা যান, আর এডিসন আহত হন। আহত এডিসনকে চিকিৎসা শেষে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জর্ডানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস গত রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং মরদেহ ভারতে ফেরত পাঠানোর জন্য জর্ডান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছে। দূতাবাস আরও জানিয়েছে, মরদেহ পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা শিগগিরই পরিবারের কাছে জানানো হবে।
নিহত থমাসের পরিবার জানায়, ঘটনার পর কয়েকদিন ধরে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে ২৮ ফেব্রুয়ারি দূতাবাসের পক্ষ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে থমাসের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পরিবারটি ১ মার্চ ই-মেইলটি খুলে পড়ে। পরিবার আরও জানায়, থমাস এবং এডিসন ছাড়াও ওই দলের আরও দুই সদস্য রয়েছেন, যারা এখনো জর্ডানের কারাগারে আটক রয়েছেন।
কেরালার প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা নন-রেসিডেন্ট কেরালাইটস অ্যাফেয়ার্স (এনওআরকেএ)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত কোলাসেরি জানান, এটি অবৈধ অভিবাসনের একটি উদাহরণ। তিনি বলেন, বৈধ কর্মসংস্থান ভিসা ছাড়া অনেকেই প্রতারক নিয়োগ এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরই তারা বিষয়টি জানতে পারেন, আগে থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
এই ঘটনাটি ঘটেছে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পটভূমিতে। ইসরায়েলে কাজের সন্ধানে অনেকেই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিতে চেষ্টা করেন, যা প্রায়শই বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।