নজরুল ইসলাম শরীফ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট): বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ১০টি গণসৌচাগারের বেহাল দশা। সংস্কারের অভাবে
ব্যবহারে অনুপযোগী। হয়েছে বেদখল। পৌর কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। জনভোগান্তি এখন চরমে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মোরেলগঞ্জ পৌরসভাটি পানগুছি নদীর তীরবর্তী দুই
প্রান্তে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ পৌরসভায় জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। ১৯৮৮
সালে প্রতিষ্ঠার পর সি গ্রেডে এর কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ‘এ’ গ্রেডে
উন্নত হলেও পরিবর্তনের ছোয়া লাগেনি গণসৌচাগার, রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও
পয়ঃনিষ্কাশনের। রয়েছে সুপেয় পানির অভাব। দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে পৌরসভাবাসী কাঙ্খিত নাগরিক
সুবিধা থেকে হয়েছে বঞ্চিত। ১০টি গণসৌচাগার দেখভাল ও সংস্কারের অভাবে ব্যবহারে
অনুপযোগী হয়ে জনভোগান্তি এখন চরমে।
শহরের প্রাণ কেন্দ্র বারইখালী ব্রীজ সংলগ্ন গণসৌচারগার, সানকিভাঙ্গা খেয়াঘাট সংলগ্ন
গণসৌচাগার, মাছের বাজার গণসৌচাগার, মুক্তিযোদ্ধা অফিস সংলগ্ন গণসৌচাগার,
কর্মকার পট্টি সড়কের বয়রাতলা গণসৌচাগার, পৌর ভবন সংলগ্ন গণসৌচাগার, নব্বইরশী
বাসষ্ট্রান্ড সংলগ্ন গণসৌচাগার ২০০৭ সালে প্রলংকারি ঘূর্ণিঝড় সিডর পরবর্তীতে
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হাই ছোয়া পৌরসভার তত্বাবধানে ১০টি সৌচাগার নির্মাণ হয়।
পরে নির্মিত এ গণসৌচাগারগুলো পৌর কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব ও নির্দিষ্ট
পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় অধিকাংশ গণসৌচাগারের মটার, পানির ট্যাংকিসহ সহ
মালামাল চুরি হয়ে যায়। বর্তমানে ২/১টি সচল থাকলেও অধিকাংশ সৌচাগার ব্যবহারে
অনুপযোগী। যে কারনে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ থেকে
উপজেলা শহরে আশা মানুষগুলোর। কর্মকার পট্টি সড়কের বয়রাতলা গণসৌচাগারটি হয়েছে
বেদখল। সংস্কারের অভাবে ফাটল ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে একাধিখ সৌচাগার। মূল
ফটকে নেই দরজা।
পৌরসভার সাবেক ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সানকিভাঙ্গা
গণসৌচাগারটি নির্মাণের পর থেকেই মাটার ও পানির ট্যাংকিসহ মালামাল চুরি হওয়ায়
সেটি এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আশা
মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। সৌচাগারগুলো সংস্কার করে সচল করার জন্য প্রশাসনের প্রতি
জোর দাবি জানান।
স্থানীয় মাছ বাজার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন খান, জাকির খান, বেলায়েত হোসেন বলেন,
সৌচাগার নির্মাণের পর থেকে আর কোন সংস্কার হয়নি। নিজেদের অর্থ ব্যায় করে কোনমতে
মেরামত করে ব্যবহার করছেন তারা। পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট সৌচাগারগুলো সংস্কার করে ব্যবহারের
উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াজিহুর রহমান বলেন, পৌরসভা এলাকায়
গণসৌচাগারগুলো অধিকাংশই ব্যবহারে অনুপযোগী রয়েছে। এগুলো অচিরেই সংস্কার করে সচল করা হবে।
ইতোমধ্যে শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ দুটি সৌচাগার সংস্কার করে সেখানে দেখভালের জন্য
পরিচ্ছন্নতাকর্মী দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সর্ম্পকে নবাগত মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ্ধসঢ়; বলেন, পৌরসভার
গণসৌচাগারগুলো বেহাল দশার বিষয়টি তিনি অবহিত নন। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে
সৌচাগারগুলো ব্যবহারে উপযোগী করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।
https://www.kaabait.com