সর্বশেষ :
লক্ষ্ণীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে তালা দিয়ে আগুন: ঘুমন্ত শিশু নিহত, দগ্ধ ৩ ধর্ম নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় হত্যা করে লাশ পোড়ানো, গ্রেপ্তার ৭ নিথর দেহে দেশে ফিরলেন ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় মানিক মিয়ায় ওসমান হাদির শেষ বিদায়, জানাজা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ওসমান হাদির মৃত্যুতে পালিত হচ্ছে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক অস্থির পরিস্থিতিতে শিল্পকলার সব আয়োজন বন্ধ ওসমান হাদির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, দুপুরে সংসদ ভবনে জানাজা লাঠি ভর দিয়ে চলা বৃদ্ধও আসামি:  মোরেলগঞ্জে হয়রানিমূলক মামলা  প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ  ও মানববন্ধন কুতুবদিয়ায় আলফা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মৃত্যুদাবি পরিশোধ বাগেরহাটে হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে  বিক্ষোভ
শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

জার্মানির এক শিকারি নারীর কথা

প্রতিনিধি: / ১২৬ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শিকারিদের ভাবমূর্তির সমস্যা রয়েছে। রোমাঞ্চিত হতে প্রাণীহত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রকৃতি সুরক্ষা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখছে। জার্মানি মাগনুস ভ্যাসেল ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ মনে করেন, খাবার কোথা থেকে আসছে মানুষের তা জানার অন্তর্নিহিত প্রয়োজন রয়েছে। এবং অবশ্যই শিকার হচ্ছে টেবিলে মাংস পৌঁছানোর সবচেয়ে সরাসরি আদ্যস্থল। জার্মানিতে শিকার ট্রেন্ডি ব্যাপার। অনেক নারী ক্রমশ এতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাদের একজন শ্যানা রাইস। বর্তমানে জার্মানির হান্টিং স্কুলগুলোর এক চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী নারী। শ্যানা ভোর ছয়টায় শিকারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। তিনি বলেন, এই শিকারের জায়গায় আমরা মূলত রো হরিণ পাই। তার শিকারের জায়গার নাম রাইন হেসেন। ফ্রাঙ্কফুর্টের ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে ওয়াইনের জন্য পরিচিত অঞ্চল এটি। জার্মানিতে শিকারের লাইসেন্স আছে এমন চার লাখের বেশি মানুষের একজন শ্যানা। ২০১৭ সাল থেকে এই তালিকায় বছরে পাঁচ হাজারের মতো নতুন শিকারি যোগ হচ্ছেন।

শ্যানা রাইস বলেন, আমরা দ্রুততর পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে যে-কোনো কিছু সবসময়ই সহজলভ্য। কিন্তু শিকারের ক্ষেত্রে আপনার কিছুক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে এবং কী পাওয়া যায় তার অপেক্ষায় থাকতে হবে। আমি মনে করি অনেকের কাছে এটাই আকর্ষণীয় যে আপনি প্রকৃতির কাছে ফিরে যান এবং যুক্ত হন। জার্মানিতে যা শিকার করা যায় তিনি এবং তার শিকারি কুকুর হেনরিয়েটে শিকারের সন্ধান করে। জার্মানিতে সবচেয়ে সহজ শিকার হচ্ছে হরিণ, বুনো শুয়োর এবং শিয়াল। কোন প্রাণীটি কখন এবং কত সংখ্যায় শিকার করা যাবে তা কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয়। শ্যানা রাইস বলেন, আমি শিকার করার কারণ আছে। আমি মজা করতে এটা করি না – আমি এটা করি কারণ এর একটা দিক আছে। আজ অবধি এর প্রতি আমার অনুভূতি বদলায়নি। আমি যদি কোনো হরিণের আস্তানায় বিশবার যাই এবং হরিণটির নাম জানি, তাহলে বিষয়টি অনেক জটিল হয়ে যায়। আমি তখন চাইবো অন্যকেউ সেটিকে মারুক। কারণ আমি সেটির সঙ্গে একধরনের সম্পর্ক অনুভব করি।

ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ জার্মানির মাগনুস ভ্যাসেল বলেন, হাজার বছর ধরে শিকার আমাদের পরিবেশকে একটা আকার দিয়েছে – মধ্য ইউরোপেরক্ষেত্রে সেটা ছয় থেকে দশ হাজার বছর। বন্যপ্রাণীর সংখ্যার উপর সবসময়ই এর প্রভাব রয়েছে। শিকারিরা প্রায়ই ভাবমূর্তির সংকটে পড়েন, কারণ, তারা পশুহত্যা করেন। অনেক আগে মানুষ খাবার এবং পোশাকের প্রয়োজনে শিকার করতেন। মধ্যযুগে অভিজাত সম্প্রদায়ের শিকার করার অধিকার ছিল। তারা নিজেদের পরিতৃপ্তির জন্য শিকার করতেন। মাগনুস ভ্যাসেল বলেন, যদি ঠিকভাবে শিকার করা হয় এবং যেসব প্রজাতি শিকার করা হয় না সেগুলো শান্তিতে থাকতে পারে, তাহলে এটা আসলে খাদ্য সংগ্রহের এক ন্যায়সঙ্গত উপায়। এবং এটি প্রাণী স্বার্থ রক্ষা করে শিকার ব্যবস্থাপনা এবং মানুষের স্বার্থের মধ্যে সমন্বয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ করে। প্রাণীর প্রতি সম্মান শ্যানা পেশায় একজন ওয়াইন উৎপাদক। তিনি তার পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম হিসেবে আঙ্গুর-খেত দেখাশোনা করছেন। এখানে হরিণের সংখ্যা বেড়ে গেলে আঙ্গুর উৎপাদন ব্যাহত হয়।

তিনি বলেন, বসন্তে হরিণগুলো আসলেই আঙ্গুরখেতে মুকুল খেতে পছন্দ করে। এই মুকুল আঙ্গুরের ভিত্তি। সেগুলো না থাকলে আঙ্গুরও হবে না। তাই, দুর্ভাগ্যজনক হলেও হরিণ নিধন করতে হয়। শিকার করা হরিণ দ্রুত দক্ষতার সঙ্গে কাটতে হয় যাতে সেটিকে খাওয়ার উপযোগী করা যায়। শেনা এটিকে প্রাণীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এক উপায় মনে করেন। তিনি বলেন, আমার কাছে যা খুব গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে শিকারটি যাতে দ্রুত মারা যায়। আমি সেটিকে কোনো কষ্ট দিতে চাই না। আমি সেটির বেদনা কমাতে চাই। আমি সেটিকে সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলতে চাই। বন্যপ্রাণীর প্রতি নিজের ভালোবাসা এবং শিকারি মনের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব দেখেন না শ্যানা।


এই বিভাগের আরো খবর