রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
Notice :
Wellcome to our website...

এয়ার ইন্ডিয়া বোমা হামলা মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে কানাডায় একজনের যাবজ্জীবন

প্রতিনিধি: / ১৯৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় ১৯৮৫ সালের এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট বোমা হামলার মামলায় খালাস পাওয়া শিখ ব্যবসায়ী রিপুধামান সিং মালিক হত্যার দায়ে দুই আসামির একজন ট্যানার ফঙ্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সুপ্রিম কোর্ট। ফঙ্কে ২০ বছর পর্যন্ত প্যারোল মুক্তি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ২০২২ সালের ১৪ জুলাই কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের সারে শহরে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়িতে বসা অবস্থায় রিপুধামান সিং মালিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ কাছাকাছি একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি খুঁজে পায়, যা সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের ব্যবহৃত বলে ধারণা করা হয়। হত্যার অভিযোগে ট্যানার ফঙ্ ও হোসে লোপেজকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে ফঙ্ ও লোপেজ আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করেন। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ কলম্বিয়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ফঙ্রে বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। লোপেজের সাজা আগামী শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা করা হবে। মালিকের পরিবারের সদস্যরা আদালতে ফঙ্রে কাছে অনুরোধ জানান, যেন তিনি হত্যার পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতাদের নাম প্রকাশ করেন। মালিকের পুত্রবধূ সন্দীপ কর ঢালিওয়াল আদালতে বলেন, ‘‘আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনাকে যারা নিয়োগ দিয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করুন।’’ আদালতে প্রসিকিউটর ম্যাথিউ স্টেসি বলেন, ‘‘ফঙ্ ও লোপেজ ইচ্ছাকৃতভাবে মালিককে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং এই হত্যার জন্য তাঁদের আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল।’’ তবে কে তাঁদের ভাড়া করেছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ২৩ জুন ১৯৮৫ সালে কানাডা থেকে ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৮২ আয়ারল্যান্ড উপকূলে বিস্ফোরিত হয়। এতে ৩২৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই কানাডার নাগরিক ছিলেন। একই দিনে জাপানের নারিটা বিমানবন্দরে আরেকটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে দুই ব্যাগেজ হ্যান্ডলার নিহত হন। এই হামলাগুলো ভারতের স্বর্ণমন্দিরে (গোল্ডেন টেম্পল) ১৯৮৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। দুই বছরের বিচার শেষে ২০০৫ সালে রিপুধামান সিং মালিক ও আজেইব সিং বাগরিকে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের অভাবে খালাস দেওয়া হয়। আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণকে পর্যাপ্ত বলে মনে করেনি। মালিকের পরিবার এখনো নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আদালতে মালিকের পুত্রবধূ বলেন, “কে তোমাদের ভাড়া করেছে, তা না জানার কারণেই এই ভয় ও উদ্বেগ কাজ করছে। এরপর কি আমরা হামলার শিকার হব?” আদালতে নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ফঙ্। তিনি বলেন, “আমি যে সব ব্যথা ও আঘাতের কারণ হয়েছি, তার জন্য দুঃখিত।” ফঙ্রে আইনজীবী জানান, ফঙ্ থাইল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অ্যাবটসফোর্ডের এক দম্পতি তাঁকে তিন বছর বয়সে দত্তক নেন। এখন পর্যন্ত মালিক হত্যাকাণ্ডের পেছনের আসল ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। মালিকের পরিবার ও আইনজীবীরা এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


এই বিভাগের আরো খবর