• শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ০১:০৬

খাগড়াছড়ির ঘটনায় রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষে নিহত ১

প্রতিনিধি: / ৮৯ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

খাগড়াছড়ির সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে আরেক পার্বত্য শহর রাঙামাটিতেও। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সকালে শহরের জিমনেসিয়াম চত্বর থেকে কয়েক হাজার পাহাড়ী একটি মিছিল নিয়ে বনরূপায় গেলে সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বাঙালিদের বেশ কিছু দোকানপাট ও বনরূপায় কয়েকটি ধর্মীয় স্থাপনায় ভাংচুর করা হয়। এ সময় রাস্তায় চলাচলকারী প্রচুর যানবাহন ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনার পর লাঠিসোঠা নিয়ে মাঠে নামে বাঙালিরাও। তাদের পাল্টা হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাঠালতলীতে অবস্থিত মৈত্রী বিহার। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় বনরূপায় পাহাড়িদের মালিকানাধিন সাজান দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা। রাঙামাটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জামালউদ্দিন জানান, সকালে পাহাড়ীদের একটি মিছিল বনরূপায় এসে ফিরে যাওয়ার সময় বিনা উস্কানিতেই বনরূপায় দেদারসে বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বনরূপা মসজিদে হামলা ও ভাংচুর করে, বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এরপরই বাঙালি ব্যবসায়িরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় ধাওয়া সংঘর্ষ হয়। রাঙ্গামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আক্তার গতকাল শুক্রবার দুপুরে জানান, তখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া একজন মারা গেছেন। তবে তার পরিচয় এখনো জানা যাযনি। এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শহরের ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এর আগে বুধবার খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় গণপিটুনিতে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় পাহাড়ীরা বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসত বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় অন্তত ৫০/৬০টি দোকান। নিহত হয় তিনজন। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই পক্ষের সেই সংঘর্ষের উত্তেজনা রাঙামাটিতেও ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের কয়েকটি স্থানে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে দীঘিনালায় হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বনরুপা বাজারে গেলে পুরো শহরে গুজব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয় আতঙ্ক। এ সময় বনরুপা বাজারে হামলা চালানো হয়। আগুন দেওয়া হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এতে কয়েকজন আহত হন। বিভিন্ন এলাকায় আহতের খবর পাওয়া গেলেও হাসপাতালে দুজন চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শওকত আকবর খান। রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com