বিদেশ : উগান্ডার সরকার জাতীয় নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সরঞ্জাম আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আসন্ন নির্বাচনে আবারও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা করছে বিরোধী পক্ষ। ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ইয়োওয়েরি মুসেভেনি আগামী ১৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ প্রায় অর্ধশতকে পৌঁছাতে চাইছেন। ওই ভোটে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ৪৩ বছর বয়সী পপতারকা থেকে রাজনীতিক হওয়া ববি ওয়াইন—যা তাদের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো লড়াই। ২০২১ সালের নির্বাচনের সময় সরকার কয়েক দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। সে নির্বাচনে মুসেভেনির কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হওয়া ওয়াইন ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেন, কারচুপির কারণেই তিনি হেরেছেন—যা মুসেভেনি অস্বীকার করেন। স্টারলিংক ডিভাইস উগান্ডায় আনার ওপর বিধিনিষেধের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ১৯ ডিসেম্বরের উগান্ডা রাজস্ব কর্তৃপক্ষের (ইউআরএ) একটি ফাঁস হওয়া স্মারকের মাধ্যমে, যা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ইউআরএর একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন যে, স্মারকটি সত্য। স্মারকে বলা হয়, এখন থেকে ‘স্টারলিংক প্রযুক্তি-সম্পর্কিত গ্যাজেট, যোগাযোগ সরঞ্জাম এবং সংশ্লিষ্ট উপাদান’ আমদানির ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর প্রধানের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। ওই পদে রয়েছেন মুহোজি কাইনেরুগাবা—যিনি প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির ছেলে। রাজস্ব কর্তৃপক্ষ নতুন বিধিনিষেধকে গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করে বলেছে, অনেক দেশই যোগাযোগ প্রযুক্তির আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ইলন মাস্কের স্টারলিংকের এখনো উগান্ডায় আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম চালানোর লাইসেন্স নেই। তবে বহু উগান্ডাবাসী স্টারলিংক ডিভাইস এনে তা ব্যবহার করছেন। বিরোধী নেতা ওয়াইন—যার আসল নাম রবার্ট কিয়াগুলানি—এঙ্ েদেওয়া এক পোস্টে স্টারলিংক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞাকে ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যা দেন। তিনি লেখেন, ‘তারা যদি নির্বাচনী কারচুপির পরিকল্পনা না করে থাকে, তাহলে ভোটের সময় মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে—এতে তারা এত ভয় পাচ্ছে কেন?’ একসময় বিদ্রোহী থাকা মুসেভেনিকে উগান্ডা স্থিতিশীল করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং এইচআইভি/এইডস মোকাবিলায় অবদানের জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, তার সরকার বিরোধীদের দমন করেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। মুসেভেনি ও তার সরকার সংবিধান দুই দফা সংশোধন করে বয়সসীমা ও মেয়াদুসংক্রান্ত বাধা তুলে দিয়েছে, যার ফলে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকতে পারছেন।